রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে রিজভীর আহ্বান

0
69

বাংলা খবর ডেস্ক: রোহিঙ্গা সমস্যা শক্ত হাতে মোকাবিলা করেছেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। পরে একই সংকট কঠোর ও সফলভাবে মোকাবিলা করেন খালেদা জিয়া। বর্তমান সংকট সমাধানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিয়ে তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানালেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই সব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, “ইতিহাস সাক্ষী, দেশের জনগণ সাক্ষী, মিয়ানমার বারবার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু ৭৮ সালে সেটি শক্ত হাতে মোকাবিলা করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ৯২ সালেও রোহিঙ্গা সংকট কঠোর ও সফলভাবে মোকাবিলা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এটি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের যারা খবর রাখেন সেই সমস্ত ব্যক্তিরাও এই কথাগুলো উল্লেখ করছেন।”

একই বিষয়ে বলেন, “রোহিঙ্গা সংকট কোনো দলীয়ভাবে দেখার বিষয় নয়, এটা একটা জাতীয় সংকট। এই সংকট বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্ন। ফলে জাতীয় সংলাপ ডাকুন। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সংলাপে বসুন। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান। রোহিঙ্গা ইস্যু দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে এখন সমস্যাটিকে উপক্রান্ত অবস্থায় সমাধান না করে লেজে গোবরে পাকিয়ে ফেলা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “গতকাল সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি’। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে নিজেদের অনতিক্রম্য দুর্বলতা ও ব্যর্থতার গ্লানি ঢাকতেই প্রধানমন্ত্রী আজগুবি কথা বলছেন।”

এক সপ্তাহে কোন চিকিৎসক খালেদা জিয়াকে দেখতে যাননি অভিযোগ করে বলেন, “নার্সরা তার হাতে-পায়ে হাত দিতে পারছেন না, হাত দিলেই তিনি প্রচণ্ড যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে যাচ্ছেন। ডান পায়ের গোড়ালীতে একটা ফোড়ার কারণে সেই যন্ত্রণা আরও তীব্রতর হয়েছে। অথচ সরকারি চিকিৎসকেরা দেশনেত্রীকে চিকিৎসা করছেন না। তাকে জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। দেশবাসী তার অসুস্থতা নিয়ে উৎকণ্ঠায় প্রহর গুনলেও স্বাস্থ্যের সঠিক অবস্থা জনগণের সামনে প্রকাশ করছে না সরকার।”

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “আমরা উদ্বেগের সঙ্গে আপনাদের জানাতে চাই, কারাগারে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অপকৌশল প্রয়োগ করছে সরকার। বিনা চিকিৎসায় তাকে কারাগারে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার চক্রান্ত চলছে। গত ৬৪৫ দিন যাবৎ বিনা অপরাধে কারাবন্দী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে গুরুতর অসুস্থ এটা দেশের প্রতিটি মানুষ জানেন। অথচ সবকিছু জেনেও শুধুমাত্র রুদ্ধ কপাট মুক্তিহীন দেশনেত্রীকে রোগে-শোকে কষ্ট দেওয়ার জন্যই তার চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। সুচিকিৎসার অভাবে ৭৫ বছর বয়স্ক চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে অবনতি ঘটছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ইতিহাস আওয়ামী লীগের।”

পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সরকারের শেখানো বক্তব্য ও ব্যাখ্যা দিলেও সুচিকিৎসার কোন পদক্ষেপই নেয়নি বলে অভিযোগ রিজভীর।

তিনি বলেন, “দেশনেত্রী হাইলি এক্টিভ ডিফরমিং, রিউমেটোয়েড আর্থাইটিস, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। রোগের প্রয়োজনীয় যথাযথ চিকিৎসা ও পরিচর্যা না হওয়ার কারণে ওনার হাত ও পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টগুলোসহ বিভিন্ন জয়েন্ট ফুলে গেছে এবং তাতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। উঠতে-বসতে পারছেন না।জয়েন্টগুলো শক্ত হয়ে যাচ্ছে,যা অচিরেই স্থায়ী রূপ ধারণ করতে পারে। হাত, পায়ের আঙুল বেঁকে যাচ্ছে। নিজ হাতে কিছু খেতেও পারছেন না। অথচ এই সমস্ত জটিল ও গুরুতর রোগগুলোকে নিয়ে সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা উপহাস করছেন।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here