বাংলা খবর ডেস্ক: নিখোঁজের ২ দিন পর বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় নদী থেকে ট্রলিচালক শহিদুল ইসলামের (৩৪) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার সূত্রাপুর ফুলজোড় নদীর ঘাটপাড় এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরকীয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে সন্দেহে নিহতের স্ত্রী সালমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। পরকীয়া প্রেমিক শাহিন আলম পলাতক।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের সূত্রাপুর আখিরীপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম স্ত্রী সালমার সঙ্গে সূত্রাপুর গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে শাহিন আলমের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে। একপর্যায়ে কয়েকমাস পূর্বে পালিয়ে গিয়ে তারা বিয়ে করে এবং ২ মাস সংসারও করে।
তার পরও সালমার পূর্বের স্বামী শহিদুল তাকে মেনে নিয়ে ঘর-সংসার করতে থাকে। এর পরও তাদের মধ্য পরকীয়ার সম্পর্ক অটুট থাকে। এ নিয়ে প্রায়ই শহিদুল ও সালমার মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত।
এর প্রেক্ষিতে স্ত্রী সালমা গত দুইদিন আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহিদুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে কৌশলে নদী থেকে পানি আনতে পাঠায়। তারপর আর সে বাড়ি ফিরে আসেনি।
এ দিকে শহিদুল নিখোঁজের ২ দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় লোকজন ফুলজোড় নদীর সূত্রাপুর ঘাটপাড় এলাকায় শহিদুলের ব্যবহৃত লুঙ্গি ও গামছা দেখতে পায়। এতে তাদের সন্দেহ হলে নদীতে জাল নামিয়ে দীর্ঘক্ষণ খোঁজা-খুঁজির একপর্যায়ে দুপুর দেড়টার দিকে জালের সঙ্গে লাশ উঠে আসে।
খবর পেয়ে শেরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে স্ত্রী সালমাকে আটক করে থানা আনা হয়।
শহিদুল হত্যার ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে শাহিন আলমের চাচা হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেন। এতে শাহিন আলমকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এ দিকে শহিদুলের লাশ উদ্ধার হওয়ার পরপরই শাহিন আলম পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পলাতক শাহিন আলম বগুড়া শাহ সুলতান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্ত্রী সালমা জড়িত থাকতে পারে এমন অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবীর জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শাহিন জড়িত রয়েছে বলে আটক সালমা প্রাথমিকভাবে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। শাহিন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ ব্যাপক তৎপর রয়েছে।