সীমান্তে হত্যা বন্ধে ফের প্রতিশ্রুতি দিলো বিএসএফ

0
338

বাংলা খবর ডেস্ক: সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধে ফের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এসময় সীমান্ত সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য পাচার প্রতিরোধ এবং অবৈধ সীমান্ত পারাপার বন্ধে আলোচনা হয়।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর সোনাইকান্দি বিওপির ওপারে পদ্মার চরে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি দেয় বিএসএফ।

বিএসএফের বহরমপুর সেক্টর এ বৈঠকের আয়োজন করে। এই সেক্টরের ডিআইজি কুনাল মজুমদারের নেতৃত্বে এতে বিএসএফ ৩৫ ব্যাটালিয়নের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন। এদিকে বিজিবির প্রতিনিধিত্ব করেন রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তুহিন মাসুদ।

বৈঠকে অংশ নেয়া এক বিজিবি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে রাজশাহী অঞ্চলে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। গেল এক মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ সীমান্তে অন্তত নয়জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। যা অনাকাঙ্ক্ষিত। কেউ ভুল করে ভারতীয় সীমানায় অনুপ্রবেশ করলে রেওয়াজ অনুযায়ী পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ জানানো হয়। বৈঠকে গেল ৩১ জানুয়ারি রাজশাহীর পবা উপজেলার সোনাইকান্দি বিওপি এলাকার পদ্মা থেকে পাঁচ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গও তোলা হয়।

বিএসএফ কমান্ডারকে বিজিবি জানায়, বাংলাদেশের ভেতরে পদ্মা নদীতে স্পিড বোটে করে তেড়ে এসে তাদের তুলে নিয়ে যায় বিএসএফ। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজও দেখানো হয়েছে বিএসএফকে।

বিজিবির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এ ঘটনার প্রথম দফা পতাকা বৈঠকে বসার প্রতিশ্রুতি দিলেও বিএসএফ হাজির হয়নি। পরে দ্বিতীয় দফায় পতাকা বৈঠক হলেও বাংলাদেশি পাঁচ জেলেকে মুক্তি দেয়া হয়নি। বরং উল্টো ভারতীয় ভূ-খণ্ডে অনুপ্রবেশের অভিযোগ এনে তাদের মুর্শিদাবাদ পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে পাল্টা অভিযোগ করেছে বিএসএফ। বিশেষ করে গরু চোরাকারবারীরা বিএসএফের বাধা উপেক্ষা করে ভারতে ঢুকে পড়ে। চোরাকারবারীরা অনেক সময় হামলা চালায়। তখন বাধ্য হয়ে তাদের ওপর গুলি চালায় বিএসএফ।

বরাবরের মতই ওই বৈঠকে সীমান্ত হত্যা-নির্যাতন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিএসএফ। একই সঙ্গে মাদকদ্রব্য পাচার প্রতিরোধ এবং অবৈধ সীমান্ত পারাপার বন্ধে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা হয়েছে সীমান্ত সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে।

এছাড়া অবৈধভাবে গবাদিপশুর প্রবেশ রোধ, অবৈধ অস্ত্র-গোলাবারুদ বিস্ফোরক পাচার প্রতিরোধ, নারী, শিশু ও মানবপাচার প্রতিরোধ, অবৈধ সীমান্ত পারাপার বন্ধ, নিশ্ছিদ্র সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সমন্বিত টহলসহ সীমান্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সৌহার্দপুর্ণ পরিবেশে অত্যন্ত ফলপ্রসু আলোচনা হয়।

বৈঠকে সীমান্তে বিরাজমান শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখাতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়। এছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তির আলোকে উদ্ভুত যে কোনো সমস্যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সময় ব্যাটালিয়ন অথবা কোম্পানি অথবা বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে যোগাযোগ ও পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানে ঐক্য মতে পৌঁছায় দুই পক্ষ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here