যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তিতে যা আছে

0
97

বাংলা খবর ডেস্ক: আফগানিস্তানে যুদ্ধ বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি হয়েছে। শনিবার দুবাইতে এই শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হয়। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে প্রায় ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। তালেবান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সই হওয়া চুক্তিতে ৪টি মূল ক্যাটাগরি রয়েছে। খবর আল-জাজিরার।

ঐতিহাসিক এ চুক্তিতে যা আছে
১. যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে বলে নিশ্চয়তা দিতে হবে।

২. আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা সরিয়ে নেওয়ার টাইমলাইন ঘোষণার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

৩. আন্তর্জাতিক সাক্ষীর উপস্থিতিতে আফগানিস্তানের মাটি থেকে সব বিদেশি সেনা সরিয়ে নেওয়ার গ্যারান্টি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহৃত হতে না দেওয়ার গ্যারান্টি দেওয়ার পর আফগানিস্তান ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে (যুক্তরাষ্ট্র যাকে স্টেট হিসেবে স্বীকার করে না, বরং তালেবান হিসেবে বিবেচনা করে) আফগান সরকারের (তালেবান যাকে সরকার হিসেবে মানে না) সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। এই আলোচনা হবে ১০ মার্চ ২০২০ থেকে; যা হিজরি ১৫ রাজ ১৪৪১।

৪. আফগানিস্তানের ভেতরকার দুই পক্ষের আলোচনায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হবে। দুইপক্ষ যুদ্ধবিরতির তারিখ এবং প্রকারতা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসবে। এছাড়া আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রোডম্যাপ কি হবে তাও ঘোষণা করা হবে দুইপক্ষের আলোচনার মাধ্যমে।

চুক্তি সই হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং আফগান সরকারের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-তালেবানের চুক্তি অনুযায়ী তালেবান যদি তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তাহলে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে অবশিষ্ট সকল সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে যৌথবাহিনী।

২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে আফগানিস্তান ভিত্তিক আল-কায়েদা গ্রুপ হামলার পর দেশটিতে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্র। উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ২ হাজার ৪শ’র বেশি মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে। এখনও দেশটিতে প্রায় ১২ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। সংঘর্ষের অবসানের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২০১১ সাল থেকে আফগানিস্তানে শান্তি নিয়ে আলোচনা করতে আসা তালেবান নেতাদের আশ্রয় দিয়েছে কাতার। ২০১৩ সালে তালেবানের একটি কার্যালয় চালু করা হয়, তবে পতাকা নিয়ে বিরোধে সেই বছরই সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

২০১৮ সালে তালেবান ঘোষণা করে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে বসবে যাতে শান্তির একটি রোডম্যাপ তৈরি করা যায়। তবে তখন তারা পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের সঙ্গে সঙ্গে কোন আলোচনায় বসতে অস্বীকার করে। ওই সরকারকে তারা আমেরিকান পুতুল বলে বর্ণনা করে।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ সপ্তাহের মধ্যে ৫৪০০ সেনা সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আলোচক। কিন্তু কয়েকদিন পরে তালেবানের হামলায় একজন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর আলোচনাকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পর্দার আড়ালে উভয় পক্ষ আবার আলোচনা শুরু করে। এক সপ্তাহ আগে সহিংসতা কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয় তালেবান; যদিও আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, এই সময়ের মধ্যেই তাদের হামলায় ২২জন সৈনিক এবং ১৪জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here