লকডাউন তুললে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ পরিণতি : সতর্ক করলেন ফাউচি

0
176
ড. অ্যান্থনি ফাউচি

বাংলা খবর ডেস্ক:
লকডাউন শিগগিরই তুলে নিলে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নতুন করোনাভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ড. অ্যান্থনি ফাউচি।

অর্থনীতি ফের সচলের ক্ষেত্রে ফেডারল গাইডলাইন মানা না হলে যে সব জায়গায় ভাইরাসের ‘ছোট ছোট উত্থান’ দেখা যাচ্ছে তাই একসময় প্রাদুর্ভাবে পরিণত হতে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন একটি কমিটির এক শুনানিতে ফাউচি এসব মন্তব্য করেন।

কোভিড-১৯ এ যুক্তরাষ্ট্রে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা দাপ্তরিক হিসাবে পাওয়া ৮০ হাজারের চেয়ে বেশি হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

বিবিসি জানায়, লকডাউন তোলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এ সংক্রামক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেশটির প্রেসিডেন্টের অবস্থান পুরোপুরি বিপরীত। মার্কিন অর্থনীতি যত দ্রম্নত সম্ভব পুনরায় সচলে তার প্রবল আগ্রহের কথা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খোলামেলাভাবেই বলে আসছেন।

সিনেট কমিটির শুনানিতে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত হওয়া ফাউচি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পুনরায় সচলে হোয়াইট হাউসের পরিকল্পনার পরিণতি নিয়ে সতর্ক করেন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসে থাকতে পারেন, এ আশঙ্কায় বর্তমানে দুই সপ্তাহের আইসোলেশনে আছেন তিনি।

হোয়াইট হাউসের পরিকল্পনার মধ্যে অঙ্গরাজ্যগুলোকে ১৪ দিন পরপর তিন ধাপে লকডাউন শিথিল এবং স্কুল ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিবিসি বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা না কমলেও দেশটির বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্য এরই মধ্যে বিধিনিষেধ শিথিল করে কিছু কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে, সেখানে সংক্রমণ আরও বাড়তে শুরু করেছে।

এভাবে লকডাউন শিথিলে প্রাদুর্ভাব মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে আর তখন কর্মকর্তারাও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না বলে সতর্ক করেছেন ফাউচি।

বলেছেন, নতুন করে সৃষ্ট প্রাদুর্ভাব অর্থনীতি সচলের চেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, ‘কষ্ট ও মৃতু্যর’ দিকে নিয়ে যেতে পারে।

মার্কিন অর্থনীতি সচলে হোয়াইট হাউস গাইডলাইন ঠিক করে দিলেও লকডাউন কীভাবে শিথিল করা হবে তা পুরোপুরি অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নদের উপর নির্ভর করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে শরৎকালে নতুন এ করোনাভাইরাস ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে এ সংক্রামক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ব্যাপারটা এখনো অনুমাননির্ভর, তবে সম্ভব।’

নতুন করোনাভাইরাসের কবল থেকে বাঁচতে বেশ কয়েকটি টিকা নিয়ে কাজ চলছে বলেও জানান ফাউচি। তবে এর যে কোনো একটি ‘কার্যকর হিসেবে আবির্ভূত হবেই’ এমন নিশ্চয়তা দিতে পারেননি তিনি।

‘অনেকেই কাজ করছে। আশা করছি, অনেক বিজয়ীকে দেখতে পাব আমরা,’ বলেছেন তিনি।

তিন ঘণ্টার এ শুনানিতে ফাউচি ছাড়াও হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের আরও দুই সদস্য এবং সিনেটের হেলথ, এডুকেশন লেবার অ্যান্ড পেনশন বিষয়ক কমিটির কিছু সদস্যও ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত হন।

আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসে থাকতে পারেন, এ আশঙ্কায় ফাউচির মতোই শুনানিতে অংশ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক ড. রবার্ট রেডফিল্ড এবং ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনস অ্যাসোসিয়েশনের কমিশনার স্টিফেন হানও স্বেচ্ছায় আইসোলশনে আছেন।

ভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা হলেও ফাউচির দেহে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। আপাতত বাড়ি থেকেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি এবং পরে তার শরীরে ফের ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here