প্রধানমন্ত্রী হয়েও স্ন্যাকস খাওয়ার জন্য ক্যাফেতে প্রবেশে অগ্রাধিকার নেই

0
114
স্ন্যাকস খাওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডেন

বাংলা খবর ডেস্ক:
স্ন্যাকস খাওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডেন। ক্যাফের ভিতরে সব আসন পূর্ণ হয়ে গেছে, তাই অন্য সব কাস্টমারের মতো তাকেও লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। এক পর্যায়ে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হলো আসন খালি না থাকায়। প্রবেশ প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় পার্টনার ক্লার্ক গেফোর্ডকে নিয়ে তিনি রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। পরক্ষণেই একটি টেবিল খালি হয়। সঙ্গে সঙ্গে একজন ম্যানেজার তাদেরকে ফিরিয়ে আনেন। নানাবিধ মানবিক কারণে জাসিন্দা আরডেন এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বিশেষ করে ক্রাইস্টচার্চে যখন দুটি মসজিদে গুলি চালিয়ে সন্ত্রাসী ব্রেন্টন মুসলিমদের হত্যা করে, তখন তিনি যেভাবে মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাতে সারাবিশ্বে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন।

এমন একজন মানুষ, বিশেষ করে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে স্ন্যাকস খাওয়ার জন্য ক্যাফেতে তার প্রবেশে অগ্রাধিকার নেই! বিষয়টি ভাবা যায়। ঘটেছে তাই-ই। লন্ডনের অনলাইন দ্য গার্ডিয়ান এ খবর দিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার। এদিন তিনি ওয়েলিংটনের একটি জনপ্রিয় ক্যাফেটে গিয়েছিলেন স্ন্যাকস খাওয়ার জন্য। কিন্তু তাকে যেতেই প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি। কারণ, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য দূরত্ব বজায় রেখে ওই ক্যাফেতে আসন নির্ধারণ করা ছিল ১০০টি। এর সবটা ছিল মানুষে ভর্তি। অগত্যা জাসিন্দা আরডেনকে তাৎক্ষণিকভাবে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি। তাকে সাধারণ মানুষের মতো লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। এ নিয়ে দিনের মধ্যভাগে জোই নামে একজন টুইটারে লিখেছেন, ও মাই গড! জাসিন্দা আরডেন অলিভে (ক্যাফে) ঢোকার চেষ্টা করেছেন এবং ভিতরে পরিপূর্ণ থাকার কারণে তাকে তখনই প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি। এই টুইটে তিনি একটি হতাশার ইমোজি ব্যবহার করেছেন। তিনি এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন যে, লেবার দলের নেতা এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও জাসিন্দাকে ওই ক্যাফেতে প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি। এর ১৫ মিনিট পরে তিনিই আবার টুইট করেন, মনে কিছু করবেন না। অবশেষে তাকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে।

এরও দু’এক ঘন্টা পরে এই টুইটের জবাব দিয়েছেন জাসিন্দা আরডেনের পার্টনার ক্লার্ক গেফোর্ড। তিনি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য মানুষের ভিড়ের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। বলেছেন, এর জন্য দায় আমাদের। আমি তো আগে থেকে বুকিং দিয়ে যাই নি বা সংগঠিত উপায়ে যাই নি। যখন আসন খালি হয়েছিল তখন তারা আমাদেরকে নিয়ে সেখানে বসায়। এটা একটা ইতিবাচক সেবা।

কিন্তু ভাবুন অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হলে কি হতো! হয়তো তিনি আগেভাগে সেখানে স্টাফদের পাঠিয়ে দিতেন। সব ঠিকঠাক থাকতো। তারপর সময়মতো বা তার আগে-পরে গিয়ে তিনি উপস্থিত হতেন। কিন্তু জাসিন্দা আরডেনের অফিসের মুখপাত্র বলেছেন, ক্যাফের বাইরে অপেক্ষা করা যেকারো জন্য অভিজ্ঞতার, বিশেষ করে যখন নিউজিল্যান্ডে ভাইরাস নিয়ে বিধিনিষেধ আছে। প্রধানমন্ত্রী অন্য সবার মতোই আচরণ করেছেন।

নিজের নাম প্রকাশ না করে ওই ক্যাফের মালিক নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডকে বলেছেন, জাসিন্দা আরডেনের জন্য কোনো ব্যতিক্রম ব্যবস্থা করা হয় নি। ভিতরে আসন খালি না থাকায় জাসিন্দা আরডেন ও তার পার্টনার গেফোর্ডকে প্রথমে ক্যাফের ম্যানেজার ফিরিয়ে দেন। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যে একটি টেবিল ফাঁকা হয়। এ সময় ওই ম্যানেজার পিছন থেকে দৌড়ে গিয়ে তাদেরকে ফিরিয়ে আনেন। আধা ঘন্টা ভিতরে অবস্থান করে তারা চলে যান। এ সময় তাদের আচরণ ছিল অমায়িক। সব স্টাফের সঙ্গে ভালবাসাপূর্ণ আচরণ দেখিয়েছেন। আর জাসিন্দার সঙ্গে স্টাফরা আচরণ করেছেন একজন সাধারণ কাস্টমারের মতো। তবে এদিন প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা কি কি খাবার অর্ডার করেছিলেন তার তালিকা প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এ সময়ে তাদের সঙ্গে ২৩ মাস বয়সী মেয়ে নিভি ছিল না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here