শিপ্রার মামলার আবেদন গ্রহণ করেনি কক্সবাজার থানা

0
105
শিপ্রা দেবনাথ। ফাইল ফটো

বাংলা খবর ডেস্ক:
মেজর (অব.) সিনহার সহযোগি শিপ্রা দেব নাথের ডিজিটাল আইনে করা মামলার আবেদন গ্রহণ করেনি কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিপ্রা দেব নাথ ও সাহেদুল ইসলাম সিফাত একজন আইনজীবীকে নিয়ে থানায় যান। কিন্তু ঘটনাস্থল রামু থানা এলাকায় হওয়াতে মামলাটি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান সদর মডেল থানার ওসি খায়রুজ্জামান। মামলাটি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় না করে রামু থানা অথবা আইসিটি ট্রাইব্যুনালে করারও পরামর্শ দেন ওসি।

মামলার এজাহারে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ এনে পুলিশের কর্মকর্তাসহ অন্তত দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে।

শিপ্রা দেব নাথের আইনজীবী এডভোকেট মাহবুবুল আলম টিপু জানিয়েছেন, টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ নিহতের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামী শিপ্রা দেব নাথ জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশকিছু ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সামাজিকভাবে শিপ্রা হেয় হয়েছেন। তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলেও জানান শিপ্রার আইনজীবী। এ কারণে সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার আশায় সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা পিবিআই পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানসহ ১০০-১৫০ জনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করতে থানায় এসেছি।

কিন্তু কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ আমাদের মামলাটি গ্রহণ করেনি। ঘটনাস্থল রামু থানা এলাকা হওয়ায় মামলাটি রামু থানা অথবা আইসিটি ট্রাইব্যুনালে করার পরামর্শ দিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. খায়রুজ্জামান।

উপস্থিত শিপ্রার সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে এডভোকেট মাহবুবুল আলম টিপু আরো জানান, বাদি শিপ্রা দেব নাথ মানসিকভাবে অসুস্থ। সে এখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে না। যখন সময় হবে তখন কথা বলবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলাটি রামু থানায় করবো নাকি আইসিটি ট্রাইব্যুনালে করবো তা পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে, গত সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানিয়েছিলেন, শিপ্রা ও সিফাতের কম্পিউটার ডিভাইস, মেমোরিসহ ২৯টি সামগ্রী কক্সবাজারের রামু থানায় পুলিশের হেফাজতে জিডি মুলে রক্ষিত আছে। আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতে মাধ্যম ওইসব সরাঞ্জামাদি র‌্যাব হেফাজতে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ মামলার তদন্তের স্বার্থে ওই কম্পিউটার ডিভাইস গুরুত্বপূর্ণ কাজ দিবে বলে জানান তিনি।

এর আগে, ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে পোস্টকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করবেন বলে জানান শিপ্রা দেবনাথ। নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদের সহযোগী ও রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ নিজেই সোমবার বেসরকারি চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় একথা বলেন।

পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে শিপ্রা ওই চ্যালেনের সাক্ষাৎকারে বলেন, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর রাতে এসে আমাদের কটেজ থেকে পুলিশ আমাদের দু’টি মনিটর, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ক্যামেরা, লেন্স, তিনটি হার্ডড্রাইভ এবং আমাদের ফোন ডিভাইস সব নিয়ে যায়। জব্দ তালিকায় যার কোনোটির কোনো উল্লেখ নেই। আমি জানি না, এখন কীভাবে বা কার কাছে সেসব ফেরত চাইব।

তিনি আরো বলেন, আমাদের পার্সোনাল প্রোফাইল ও ডিভাইস থেকে সে সব বিভিন্ন ছবি চুরি করে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের দায়িত্বশীল অফিসাররাই ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। আমার নামে খোলা হয়েছে ফেক ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আইডি। আমার ব্যক্তি জীবনকে যারা অসহনীয় করে তুলেছেন বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও তৈরির মাধ্যমে, তাদের প্রত্যেকের জন্য আমি তথ্য প্রযুক্তির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব, কথা দিলাম।

প্রসঙ্গ, গত ৩১শে জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। বর্তমানে দু’জনই জামিনে মুক্ত আছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here