বাংলা খবর ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত জো বাইডেনের জয় ঠেকিয়ে দেয়ার শেষ চেষ্টায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ নিয়েছেন ১১ জন রিপাবলিকান সিনেটর।
প্রখ্যাত মার্কিন আইনপ্রণেতা টেড ক্রুজের নেতৃত্বে এই দলটি নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে।
এএফপির খবরে বলা হয়, এ জন্য একটি কমিশন গঠন না করা পর্যন্ত তারা জো বাইডেনের বিজয়কে সার্টিফাই করবেন না।
এ কারণে ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বাইডেনের জয়ের সত্যায়ন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, ক্রুজের নেতৃত্বাধীন দলটি ভোট কারচুরি অভিযোগ করলেও এর কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। তবে তাদের চেষ্টা নির্বাচনী ফলের অডিট অন্তত ১০ দিন পিছিয়ে দেওয়া।
বাইডেনকে আটকে দিতে তারা সফল হবেন না। কারণ আগামী ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের অধিবেশনে বেশির ভাগ সিনেটর বাইডেনকে সমর্থন করে তার বিজয়কে সত্যায়িত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কারণ এ পর্যন্ত আইন-আদালতে ট্রাম্পশিবির অনেক দৌড়াদৌড়ি করলেও ফল উল্টে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি।
৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরাজয় মেনে নেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রমাণ ছাড়াই ভোটে কারচুপি, ভোট চুরির অভিযোগ তুলে যাচ্ছেন তিনি।
এমন অভিযোগে তিনি সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত গেলে সেখান থেকেও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। তার মামলা খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট।
সর্বশেষ অনিয়মের অভিযোগে বাইডেনের পক্ষে নির্বাচনের ফল সত্যায়ন না করার জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে ক্ষমতা দেওয়ার একটি আবেদনও খারিজ করে দেন ফেডারেল বিচারক জেরেমি কেরনোডল। এই বিচারক খোদ ট্রাম্পের হাতে নিয়োগপ্রাপ্ত।
এবারের নির্বাচনে বাইডেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২টি ভোট। নির্বাচিত হতে হলে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হয়।
ইলেক্টররা এরই মধ্যে বিজয়ীর পক্ষে সমর্থন জানালেও ৬ জানুয়ারি এই ভোটের ফলকে অনুমোদন করতে হবে কংগ্রেসকে। নাহলে ঝুলে যাবে প্রেসিডেন্ট বিজয়ীর ভাগ্য।
কংগ্রেস অনুমোদন করলে ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট শপথ নেবেন। কিন্তু টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজের নেতৃত্বে তাতে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।
টেড ক্রুজ এবং তার দলের দাবি, নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনাকাঙ্খিতভাবে ভোটে জালিয়াতি হয়েছে। নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে। নির্বাচনী আইনের প্রয়োগে ঘাটতি ছিল।
এ ছাড়া অন্যান্য অনিয়ম ঘটেছে। এক্ষেত্রে তিনি ১৮৭৭ সালের যুক্তরাষ্ট্রের ঘটনার উল্লেখ করেন। ওই সময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে উভয়পক্ষই তিনটি রাজ্যে বিজয় দাবি করেছিল। তখন ঘটনা তদন্তে দ্বিপক্ষীয় কমিটি গঠন হয়েছিল।
তার ওপর ভিত্তি করে এবার টেড ক্রুজের নেতৃত্বে সিনেটররা কংগ্রেসের কাছে আহ্বান জানাবেন একটি কমিশন গঠন করতে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, উচ্চকক্ষ সিনেট ছাড়াও প্রতিনিধি পরিষদের আরও শতাধিক আইনপ্রণেতা এই দলে যোগ দিতে পারেন।
কংগ্রেসের উভয় কক্ষের আইনপ্রণেতারা আপত্তি ওঠালে প্রতিটি আপত্তির জন্য আলাদা বিতর্ক ও ভোট হতে পারে।
এমনটি হলে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল ও পরবর্তী প্রেসিডেন্টের ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।
ওদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “সামনে আরো অনেক কিছু আসছে।”
তিনি তার হাজার হাজার সমর্থককে আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা বুধবার ওয়াশিংটনে সমবেত হন এবং তার নির্বাচনী পরাজয়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।