আবাহনী-মোহামেডান ড্র

0
63

বাংলা খবর ডেস্ক:
একটা সময় আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ নিয়ে বিভক্ত হয়ে যেত দেশ। ম্যাচের দিন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এলাকায় থাকতো বাড়তি নিরাপত্তা। তবুু থামানো যেত না সমর্থকদের মারামারি। পুলিশের লাঠিপেটা, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ এসব ছিল ঢাকা ডার্বির নিয়মিত চিত্র। ঐতিহ্যবাহী লড়াইয়ের সেই জৌলুস হারিয়ে গেছে দুই দশকেরও বেশি আগে। সাম্প্রতিক সময়ে আবাহনী-মোহামেডান লড়াই আর দর্শকদের টানে না। গত ডিসেম্বরে ফেডারেশন কাপেও মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হাজার তিনেকের মতো দর্শক হাজির ছিলেন সেদিন।
আবাহনী শক্তিশালী দল গড়লেও মোহামেডান গত দশ বছর ধরে কোনো রকমে দল গড়ে। দু’দলের লড়াইয়ের ঝাঁঝ কমে যাওয়ার এটাও অন্যতম কারণ। তবে গতকাল ঢাকা ডার্বির লড়াইটা পেয়েছিল ভিন্নমাত্রা। রোমাঞ্চ ছড়ানো সেই ম্যাচে রেকর্ড ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে মোহামেডান। ২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া পেশাদার লীগে এটা ছিল দু’দলের ২৪তম লড়াই। এর আগের ২৩ লড়াইয়ে আবাহনীর ১০ ম্যাচের বিপরীতে মোহামেডান জিতেছিল ৫ ম্যাচে। ড্র ৮ ম্যাচে।
চলতি মৌসুমে মোহামেডানের ঘরের মাঠ কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম। ঢাকা ডার্বির রোমাঞ্চ কিছুটা হলেও ফিরে এসেছিল ধর্মসাগর পারে। দর্শকে ঠাসা ঘরের মাঠে মোহামেডান নেমেছিল নিজেদের প্রমাণের লক্ষ্যে। কাগজে-কলমে ফেভারিট আবাহনী হলেও ম্যাচে দাপট দেখিয়েছে কখনো পেশাদার লীগের শিরোপা না জেতা মোহামেডান। দুই ঐতিহ্যবাহী দলের এমন লড়াই বহুদিন দেখা যায়নি। কুমিল্লায় রঙ ফেরানো ঢাকা ডার্বিতে ধারার বিপরীতে লিড নেয় সর্বশেষ ২০১৭-১৮ মৌসুমে লীগ জেতা আবাহনী। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ফ্রান্সিসকো তোরেসের গোলে ১৪ মিনিটে লিড নেয় আকাশী-নীলরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে আগের দুই ম্যাচেই হারে মোহামেডান। সাত গোল হজম করলেও আবাহনীর জালে এক গোলও করতে পারেনি সাদা-কালোরা। ম্যাচের ১৭তম মিনিটে সুলেমান দিয়াবাতের গোলে সমতায় ফেরে মোহামেডান। আক্রমণ ও বল দখলে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ৩৩তম মিনিটে জুয়েল রানার গোলে আবারো লিড নেয় আবাহনী। মোহামেডান সমতা ফেরায় ৬৬তম মিনিটে। আবারো মোহামেডানের ত্রাতা মালির স্ট্রাইকার সুলেমান দিয়াবাতে।
দেশের ফুটবলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দ্বৈরথ শেষবার ঢাকার বাইরে হয়েছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মণি স্টেডিয়ামে পেশাদার লীগে প্রথমবার ঢাকার বাইরে হওয়া ঢাকা ডার্বিতে ২-১ গোলে জিতেছিল আবাহনী। কুমিল্লায় গতকাল জিততেও পারত মোহামেডান। দ্বিতীয়ার্ধে একধিক গোলের সুযোগ মিস করায় জয় পাওয়া হয়নি শন লেনের শিষ্যদের। গত দুই দশকে তৃতীয়বার ঢাকার বাইরের দর্শকরা স্টেডিয়ামে বসে দেখল ঢাকা ডার্বি। ২০০১ সালে রংপুরে জাতীয় লীগে মোহামেডানকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল আবাহনী।
চলমান প্রিমিয়ার লীগে তিন ম্যাচের পর থামল আবাহনীর জয়রথ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আকাশী-নীলদের সংগ্রহ ৪ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে মোহামেডান। ৪ ম্যাচের সবকটিতে জিতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বসুন্ধরা কিংস।
সেই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারে জিতলো শেখ রাসেল
হেডে গোল করতে পারদর্শী এমন একজন স্ট্রাইকার খুঁজছিলেন শেখ রাসেলের কোচ সাইফুল বারী টিটু। কোচের চাহিদা মেনে সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার ব্রাজিলিয়ান জিয়ানকার্লো লোপেজকে দলে ভেড়ায় ২০১২-১৩ সালের লীগ চ্যাম্পিয়নরা। ফেডারেশন কাপে বিবর্ণ থাকলেও লীগে ছন্দে ফিরেছেন ৩১ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। গতকাল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে লোপেজের একমাত্র গোলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়েছে শেখ রাসেল। আগের ম্যাচে ঢাকা মোহামেডানের বিপক্ষে রাসেলকে ১ পয়েন্ট এনে দেয়া গোলটি করেছিলেন লোপেজ।
ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল শেখ রাসেল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here