ধবলধোলাইয়ের লজ্জা এড়াতে পেরেছে লঙ্কানরা

0
269

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
তিন ম্যাচের শুরুর দু’টি হেরে আগেই সিরিজ হার নিশ্চিত হয়েছে সফরকারীদের। ধবলধোলাইয়ের লজ্জা এড়াতে এ ম্যাচে জয় ভিন্ন ভাবনা ছিল না লঙ্কানদের। সে লক্ষ্যে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে সফরকারীরা। তিন দফা বেঁচে গিয়ে অধিনায়ক কুশল পেরেরা তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। সঙ্গে তিনটি পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটিতে যে দারুণ ভিত তিনি গড়ে দিলেন, তা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলেন না শ্রীলঙ্কার পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পাশাপাশি বাকিদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে লঙ্কানদের ৩০০ রানের নিচে আটকে দিলো বাংলাদেশ। গতকাল সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ২৮৬ রান করে শ্রীলঙ্কা।
প্রথম দুই ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটি বড় হয়নি। এ ম্যাচে বদলে যায় চিত্র।
প্রথম ওভার থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন তাদের দুই ওপেনার। শরীফুলের করা ইনিংসের প্রথম বলেই পয়েন্টে বাউন্ডারি মেরে ভয়ঙ্কর শুরুর ইঙ্গিত দেন দানুশকা গুণাতিলাকা। নিজের পরের ওভারেও তোপের মুখে পড়েন পেসার শরীফুল। ২ ওভারে ১৭ রান দেওয়ায় তাকে সরিয়ে নেয়া হয় আক্রমণ থেকে। দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও লঙ্কানদের রানের চাকায় লাগাম টানতে পারেননি। প্রথম স্পেলে মিরাজ ৫ ওভারে দেন ৩০ রান। মোসাদ্দেকের ২ ওভার থেকে গুণাতিলাকা ও পেরেরা তোলেন ১৮ রান। তাসকিনও প্রথম ওভারে সুবিধা করতে পারেননি। গুনাতিলাকা চার-ছয় মেরে আনেন ১২ রান। ফলে পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৭৭ রান। দ্বিতীয় দফা বোলিং করতে এসে ৬৮ বলে ৮২ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন তাসকিন। ৩৩ বলে ৩৯ করে ইনসাইড এজে বোল্ড হন বাঁহাতি গুণাতিলাকা। তার ইনিংসে ছিল ৫ চার ও ১ ছয়। তিন বল পর আবারও তাসকিনের আঘাত। আগের দুই ম্যাচে রান না পাওয়া পাথুম নিশানকা এবার খুলতেই পারেননি রানের খাতা। ৩ বলে শূন্য রানে তিনি ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীমের হাতে। বাংলাদেশের চালকের আসন দখলের আভাস স্থায়ী হয়নি। ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় জমে যান পেরেরা ও কুশল মেন্ডিসের তৃতীয় উইকেট জুটি। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই ৮০ বলে ৬৯ রানের জুটির ইতি টানেন তাসকিন। ঝুঁকি নিতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে মেন্ডিস ক্যাচ দেন মিড অফে। তার সম্ভাবনাময় ইনিংস শেষ হয় ৩৬ বলে ২২ রানে। এরপর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি পেরেরা। ৯৯ বলে তিন অঙ্কে পৌঁছে যান তিনি। কিন্তু তার এই অর্জনের পথে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা ফেলেন তিন তিনটি ক্যাচ! ব্যক্তিগত ৬৬ রানে শর্ট থার্ড ম্যানে মোস্তাফিজুর রহমানের ও ৭৯ রানে মিড অনে আফিফ হোসেনের হাত থেকে বেঁচে যান পেরেরা। দুইবারই বোলার ছিলেন সাকিব আল হাসান। ৯৯ রানে দাঁড়িয়েও জীবন পান পেরেরা। মোস্তাফিজের বলে মিড অফে মাহমুদুল্লাহ যে সহজ ক্যাচ ফেলেন, তা ব্যাখ্যা করা কঠিন! পরের বলেই সিঙ্গেল নিয়ে মাইলফলকে পৌঁছে বাংলাদেশের হতাশা আরও বাড়ান পেরেরা। লঙ্কানদের সংগ্রহ ২০০ পেরিয়ে যায় ৩৬তম ওভারে। শেষদিকে ঝড় তোলে স্কোর ৩০০ ছাড়িয়ে আরও দূরে নেয়ার মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। কিন্তু প্রত্যাশিত ঝড় পায়নি সফরকারীরা। আগের ভুলে প্রলেপ দিতেই কিনা মাহমুদুল্লাহ অসাধারণ এক ক্যাচে বিদায় করেন পেরেরাকে। দলীয় ২১৬ রানে শরীফুলের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ১২২ বলে ১২০ রান। তার ইনিংসে ছিল ১১ চার ও ১ ছয়। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে পেরেরা জুটি ছিল ৬৫ রানের। তবে জুটিতে ধনঞ্জয়া ছিলেন খুবই মন্থর। পরেও হাত খুলে খেলতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৭০ বলে ৫৫ রানে। তার ব্যাট থেকে আসে ৪টি চার। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত নিরোশান ডিকওলা একাদশে ফিরে উপযুক্ত পরিবেশ পেলেও ঝড় তোলার আগেই ফেরেন। তাকে রান আউট করে সাজঘরে ফেরান শরীফুল। প্রথম ওয়ানডেতে আগ্রাসন চালানো হাসারাঙ্গা ডি সিলভাও পারেননি বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হতে। তাকেও ছেঁটে ফেলেন তাসকিন। সবমিলিয়ে ৯ ওভারে ৪৬ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন তিনি। উইকেটবিহীন থাকেন বাংলাদেশের দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। আগের দুই ম্যাচের সফল বোলার মোস্তাফিজুর রহমানও উইকেট পাননি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here