করোনায় দিনে আক্রান্ত হচ্ছেন ১৫ লাখ, এশিয়ায় ছড়াচ্ছে সংক্রমণ: গুতেরাঁ

0
362

বাংলা খবর ডেস্ক:
করোনা ভাইরাসে এখনও প্রতিদিন বিশ্বে আক্রান্ত হচ্ছেন ১৫ লাখ মানুষ। নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে এশিয়ায়। আর ইউরোপজুড়ে তো নতুন এক ঢেউ চলছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, প্রতি চার মাসে একটি করে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব হচ্ছে। ফলে এশিয়ায় এই ভাইরাসের বড় রকমের বিস্তারের ক্ষেত্রে তিনি বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি এখনও শেষ হতে অনেক দেরি। এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই।

অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ সরকারগুলো এবং সব ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন একসঙ্গে কাজ করতে, যাতে প্রতিটি স্থানে প্রতিটি মানুষকে টিকা দেয়া যায়।

‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড প্রোটেকটেড- ব্রেক কোভিড নাউ’ শীর্ষক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। গুতেরাঁ ওই ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন গাভি কোভ্যাক্স এডভান্স মার্কেট কমিটমেন্ট সামিট-২০২২’তে। শুক্রবার এতে ওই ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন তিনি। গুতেরাঁ বলেন, প্রতিদিন আমরা নতুন করে ১৫ লাখ মানুষকে আক্রান্ত হতে দেখছি। এশিয়ায় বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ছে এই সংক্রমণ। ইউরোপজুড়ে দেখা দিচ্ছে নতুন ঢেউ। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে কোনো কোনো দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যুহার রেকর্ড করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আমাদেরকে চমৎকারভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, কত দ্রুততার সঙ্গে রূপান্তরিত ও বিস্তার লাভ করতে পারে কোভিড-১৯। বিশেষ করে উচ্চ মাত্রায় টিকা দেয়ার অনুপস্থিতিতে এর ব্যাপকতা বেশি দেখা গেছে। তিনি বলেন, যখন কিছু উচ্চ আয়ের দেশ তাদের দ্বিতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন এক তৃতীয়াংশ মানুষ রয়েছেন টিকাবিহীন অবস্থায়। এটা আমাদের গভীর অসম বিশ্বে এক ভয়াবহতা। নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টির জন্য এসবই হলো মৌলিক উর্বরতাক্ষেত্রে। একই সঙ্গে এতে অধিক মৃত্যু হয়, অর্থনৈতিক ও মানবিক দুর্ভোগ বৃদ্ধি পায়। গুতেরাঁ বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্ট এখন কোনো ‘যদি’র প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন হলো কখন আসছে।

তিনি বলেন, এ বছরের মধ্যভাগে প্রতিটি দেশে শতকরা ৭০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য স্থির করেছিলাম আমরা। কিন্তু তা অর্জন থেকে অনেক দূরে এখনও। গড়ে প্রতি চার মাসে একটি করে নতুন ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এক্সই রিকমিন্যান্ট ১৯ শে জানুয়ারি প্রথম শনাক্ত হয় বৃটেনে। তারপর কমপক্ষে ৬ শতাধিক সিকুয়েন্স এ পর্যন্ত রিপোর্ট করা হয়েছে এবং তা নিশ্চিত হয়েছে। তবে আগের সপ্তাহের তুলনায় মৃত্যুহার অনেক কমেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৬টি অঞ্চলে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৯০ লাখ মানুষ। মারা গেছেন কমপক্ষে ২৬ হাজার। সব অঞ্চলেই সাপ্তাহিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমেছে। ৩রা এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ৪৮ কোটি ৯০ লাখ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন কমপক্ষে ৬০ লাখ। সাপ্তাহিক ভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭৫ জন। জার্মানিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৭১ হাজার ২৭০ জন। ফ্রান্সে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪ জন। ভিয়েতনামে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৭২৫ জন এবং ইতালিতে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৫ জন। নতুন করে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে এ সংখ্যা ৪ হাজার ৪৩৫। রাশিয়ায় ২ হাজার ৩৫৭ জন। দক্ষিণ কোরিয়ায় ২ হাজার ৩৩৬ জন। জার্মানিতে ১ হাজার ৫৯২ জন এবং ব্রাজিলে ১ হাজার ৪৩৬ জন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here