আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: লিবিয়ায় বিপ্লব শুরু হওয়ার সাত বছর পূর্তি শনিবার। কর্ণেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরুদ্ধে ২০১১ সালের এই দিনেই ব্যাপকভাবে ফুঁসে উঠেছিল জনতা।
২০ অক্টোবর ২০১১ সালে নিহত হন গাদ্দাফি। সাত বছর পর এসে সমীকরণ অনেকটাই বদলে গেছে বলে মনে করছেন সে দেশের বহু নাগরিক। আবার অনেকেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তারা যে রকম রাষ্ট্র চেয়েছিলেন, তা পাননি বলেও মন্তব্য অনেকের।
তবে মৃত্যুর আগে গাদ্দাফি একটি অসিয়তনামা রেখে যান। আরবি ভাষায় লেখা সেই অসিয়তনামা এর আগেও প্রকাশ হয়েছে বহু গণমাধ্যমে।
অনেকে গাদ্দাফির সেই লেখা পড়ে আক্ষেপ করেছেন আবার অনেকে তা কূটচাল বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কালের কণ্ঠ অনলাইনের পাঠকদের জন্য গাদ্দাফির সেই অসিয়ত তুলে ধরা হলো।
‘এটা আমার অসিয়তনামা। আমি মুয়াম্মার বিন মুহাম্মদ বিন আবদুস সালাম বিন হুমায়ুদ বিন আবু মানিয়ার বিন হুমায়ুদ বিন নায়েল আল ফুহসি গাদ্দাফি, শপথ করছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো প্রভু নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তার নবী।
আমি প্রতিজ্ঞা করছি, আমি মুসলিম হিসেবেই মারা যাব। নিহত হলে, আমি চাই আমাকে যেন মুসলিম রীতি অনুযায়ী সমাহিত করা হয়।
মৃত্যুর সময় যে কাপড় পরে থাকব সে কাপড়েই এবং শরীর না ধুয়েই সিরতের গোরস্থানে যেন সমাহিত করা হয় আমার পরিবার ও আত্মীয়দের পাশে।
আমি চাই, মৃত্যুর পর আমার পরিবার বিশেষ করে নারী ও শিশুদের সঙ্গে যেন ভালো ব্যবহার করা হয়। লিবিয়ার জনগণের উচিত তাদের আত্মপরিচয়, অর্জন, ইতিহাস এবং তাদের সম্মানিত পূর্ব পুরুষ ও বীরদের ভাবমূর্তি রক্ষা করা।
লিবিয়ার জনগণের উচিত হবে না, স্বাধীন ও শ্রেষ্ঠ মানুষদের ত্যাগের ইতিহাস বিসর্জন দেওয়া। আমার সমর্থকদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন সব সময়ের জন্য আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে।
বিশ্বের সব স্বাধীন মানুষকে জানিয়ে দাও, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সুস্থির জীবনের জন্য আমরা লড়াই করেছি এবং সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছি।
আমাদের অনেক কিছু দিতে চাওয়া হয়েছিল কিন্তু এই সংঘাতের সময় দায়িত্ব ও সম্মানের রক্ষাকারী হিসেবে দাঁড়ানোকেই আমরা বেছে নিয়েছি।
যদি আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বিজয়ী নাও হই তার পরেও আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই শিক্ষা দিয়ে যেতে পারব, জাতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব বেছে নেওয়া হলো সম্মানের; আর এটা বিক্রি করে দেওয়ার মানে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা।
দায়িত্ব নিলে ইতিহাস চিরকাল মনে রাখবে।’