স্বামীর ওপর স্ত্রীর অধিকার ও স্ত্রীর ওপর স্বামীর অধিকার নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এবার ভিন্ন একটি বিষয় আলোচনার প্রয়োজন বোধ করছি। বর্তমান সমাজে স্বামী স্ত্রী উভয় চাকুরি করে থাকেন। নারীদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সে হিসেবে অনেক বিবাহিত নারীও চাকুরি করেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে সংসারে স্ত্রীও চাকুরি করেন তার উপার্জনে কী স্বামীর কোনো অধিকার রয়েছে কীনা বা সংসার খরচের জন্য ব্যয় করা বাধ্যতামূলক কীনা।

ইসলামি শরিয়া মতে, স্বামীর উপার্জনের ওপর স্ত্রীর ভরণ পোষণের অধিকার থাকলেও স্ত্রীর উপার্জনের ওপর স্বামীর কোনো অধিকার নেই। সংসারে স্ত্রীর উপার্জন থেকে ব্যয় করার জন্য তাকে বাধ্য করা যাবে না। তবে খুশি মনে যদি স্ত্রী সংসারের জন্য ব্যয় করেন এটা তার জন্য সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য হবে। তবে কোনো ক্রমেই তাকে বাধ্য করা যাবে না। খুশি মনে ব্যয় করলে ভিন্ন বিষয়।

স্ত্রীর উপার্জিত অর্থ তার অনুমতি ব্যতীত খরচ করা, কিংবা স্ত্রীকে না জানিয়ে মা-বাবা, ভাই-বোন থেকে শুরু করে কাউকে ওই টাকা দিয়ে সাহায্য করা ইসলাম অনুমোদন দেয় না। এটা জায়েজ নেই। এটা করলে স্ত্রীর অধিকার নষ্ট করা হবে এবং তার আমানতের খেয়ানত করা হবে।

স্ত্রীর উপার্জিত টাকা থেকে পারিবারিক ঋণ পরিশোধ অথবা সংসার পরিচালনার জন্য খরচ করতে হলে অবশ্যই স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। তার অনুমতি হলেই কেবল এটাই সম্ভব হবে, অন্যথায়। কারণ, স্ত্রীর সম্পদের অধিকারী স্বামী নয়। তাই স্ত্রীকে না জানিয়ে তার খরচ করলে স্বামী গুনাহগার হবে।

তবে হ্যাঁ, স্বামী তার উপার্জিত টাকা সংসারের চাহিদা মিটিয়ে নিজ পছন্দমতো খরচ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীর অনুমতি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে স্ত্রীর উপার্জিত অর্থে স্বামীর অধিকার না থাকলেও প্রয়োজনে স্বামীর সংসারের জন্য খরচ করা পুণ্যের কাজ। এতে স্বামী স্ত্রীর মাঝে মিল মুহাব্বত ভালবাসা বৃদ্ধি পাবে। একে অপরের প্রতি সহনশীল হবে। স্ত্রীর স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করেই তার অর্থ ব্যয় করা উচিত। এতে স্বামীর মনও খুশি থাকবে। তবে স্ত্রী যদি তার অর্থের ব্যাপারে স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ নাও করেন এর জন্য স্ত্রীকে দোষারোপ করা যাবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here