হায়রে সাংবাদিক!

0
1295

দর্পণ কবীর:
দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার গলা টিপে ধরার এক জঘন্য আইন পাশ হল সংসদে। সাংবাদিক নেতারা চুপ। সাংবাদিকদের মতামত নেয়া হল না। ভবিষ্যতে অনুসন্ধানী সংবাদ বা সত্য তথ্য প্রকাশের মধ্য দিয়ে সরকারি দল ক্ষতিগ্রস্ত হলে- কী হবে-তা অনুমান করা যায়। প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসনের কর্তারা সরকারি দলের মদদ নিয়ে একজন সাংবাদিককে জেলে পাঠিয়ে দেবেন-অনায়াসে। কারাদণ্ড তো থাকবে। তাহলে এখন থেকে পত্রিকাগুলোকে ‘বিটিভি’ স্টাইলে সংবাদ ছাপায় মনোযোগী হতে হবে। কৃষির বাম্পার ফলন, ক্রীড়াঙ্গনে কৃতিত্ব, অর্থনীতিতে সাফল্য-এই সব লিখে পত্রিকা বের করতে হবে। একজন সাংবাদিক কেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সত্যানুসন্ধানী সংবাদ লিখতে যাবেন।
আমাদের মিডিয়া তথা মুক্ত সাংবাদিকতা-জাদুঘরে চলে যেতে পারে। হীরক রাজার দেশের মত সমাজ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু সরকারের এমন অন্যায় সিদ্ধান্তে যারা চুপ করে আছেন-তারা হয়তো ভাবছেন-যা হবার হোক-আমার তো কিছু হবে না। সরকারি দলের সঙ্গে আপনার খুব সখ্যতা। এ ভাবনাটা আপনাকে স্বস্থি দিলেও এমন দিন তো আসতে পারে-অন্য রাজনৈতিক বা জঙ্গী সমর্থক দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসতে পারে। তখন কিন্তু সবার আগে আপনি বা আপনারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তখন চুপ করে বসে থাকতে পারবেন না। কারণ, আপনি ঐ দলের সমর্থক নন। তখন লিখবেন-আর আইনের বেড়াজালে আটকে যাবেন। এমন দিন আসলে-আপনাদের মত সাংবাদিকদের স্থান হবে কারাগারে। তাই ভবিষ্যতের কথা ভাবুন। নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভাবুন। অধিকারের কথা ভাবুন। সোচ্চার হোন।
আইনটি পাশ হবার পর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের-ডিইউজে’র (একাংশ) সভাপতি আবু জাফর সূয ফেসবুকে লিখেছেন-কিছু বলতে পারছি না-আবার সহ্য করতেও পারছি না। আপনার মর্মবেদনাকে অনুভব করে বলছি-কিছু না বলতে পারা হচ্ছে-অন্যয়কে মেনে নেয়া। এমন অবস্থানেএকজন নেতা হিসাবে সাংবাদিকদের সুরক্ষা করতে না পারার চরম ব্যর্থতা বলে বিবেচিত হবে। কোনটা বড়-পদ, নাকি দায়িত্ব?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here