বাংলা খবর ডেস্ক :
নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট এর শূন্য পদে বিশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী কাল ২৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার। নির্দলীয় এ নির্বাচনে পাবলিক এডভোকেট পদে বাংলাদেশী হেলাল শেখ সহ লড়ছেন ১৭ জন। নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট লেটিসা জেমস গত নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে নিউইয়ক স্টেট এটর্নী জেনারেল নির্বাচিত হওয়ায় এই শূন্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট পদপ্রার্থী হেলাল আবু শেখ তাকে সমর্থনের জন্য বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি বলেন, সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে এ গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে সকলে ঐক্যবদ্ধ হলে আমাদের বিজয় নিশ্চিত। বাংলাদেশী-আমেরিকান ভোটাররা কেন্দ্রে গেলেই বিজয় সুনিশ্চিত। তিনি সবসময় বাংলাদেশীসহ ইমিগ্র্যান্টদের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুন:ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশী কমিউনিটিসহ ইমিগ্রেন্টদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া বাস্তবায়নে তিনি জোরালো ভূমিকা রাখবেন। কমিউনিটির অধিকার আদায়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন।
নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে হেলাল শেখ বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে প্রায় ৯০ হাজার বাংলাদেশী-আমেরিকান রেজিট্রার্ড ভোটার রয়েছেন। তাদের অন্তত অর্ধেক ভোটার কেন্দ্রে গেলেই তার বিজয় সুনিশ্চিত। তিনি বলেন, এ নির্বাচনে মাত্র ১০/১২ হাজার ভোটেই জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে। এ ধরণের সুযোগ সব সময় আসে না। হেলাল শেখ বাংলাদেশী-আমেরিকান ভোটাদের কেন্দ্রে যাওয়ার আবেদন জানিয়ে বলেন, এ নির্বাচন ব্যক্তি হেলাল শেখের নির্বাচন নয়। এ নির্বাচন বাংলাদেশীদের বিজয়ী হওয়ার নির্বাচন। মর্যাদাপূর্ণ এ নির্বাচনে আমি বিজয়ী হওয়া মানে বাংলাদেশী কমিউনিটি বিজয়ী হওয়া। বাংলাদেশ বিজয়ী হওয়া।
হেলাল শেখ জানান, নিউইয়র্ক সিটিতে বহু বাংলাদেশির বসবাস। অথচ এখন পর্যন্ত সিটি কিংবা স্টেটে একজনকেও নির্বাচিত করতে পারিনি। এবার সিটি ওয়াইড এ নির্বাচনে একটা সুযোগ তৈরী হয়েছে। এতদিন যাদের জন্য আমরা কাজ করেছি তাদেরকে এবার বলার সময় এসেছে এবার আমাদের প্রার্থী আছে, তোমাদের সমর্থন চাই। বাংলাদেশী কমিউনিটিসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে এ গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে সকলে ঐক্যবদ্ধ হলে আমাদের বিজয় নিশ্চিত। বাংলাদেশী-আমেরিকান ভোটাররা কেন্দ্রে গেলেই বিজয় সুনিশ্চিত।
হেলাল শেখ বলেন, নিউইয়র্ক সিটি কলেজ অব টেনোলজিতে অধ্যয়নকালে তিনি দক্ষিণ এশিয়ানদের মধ্যে সর্ব প্রথম স্টুডেন্ট গভর্ণমেন্ট এসোসিয়েশনের ভিপি নির্বাচিত হন। সে অভিজ্ঞতা ও সবার সহযোগিতা নিয়ে প্রথম বাঙালী সিটি পাবলিক এডভোকেট হিসেবে তিনি কমিউিনিটির সেবা করার সুযোগ চান। নিজকে উৎসর্গ করতে চান কমিউনিটির সেবায়। তিনি বলেন, পাবলিক এডভোকেট হিসেবে বাংলাদেশী-আমেরিকানদের কন্ঠস্বর হিসেবে ভূমিকা রাখতে চাই। আপনাদের নিয়ে গড়ে তুলতে চাই একটি সুন্দর কমিউনিটি। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ।
নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট পদটি কোনো আইনজীবীর পদ নয়, এটি সিটির বিভিন্ন এজেন্সির উপর ‘ওয়াচ ডগ’ হিসাবে কাজ করে। জনগণ ও সিটি কাউন্সিলের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম পাবলিক এডভোকেট অফিস। নিউইয়র্ক সিটির মেয়রের পরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ পাবলিক অ্যাডভোকেট। মেয়রের অবর্তমানে পাবলিক অ্যাডভোকেট ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ইতোপূর্বে সাবেক মেয়র ব্লুমবার্গ এবং বর্তমান মেয়র বিল ডি ব্লাসিও পাবলিক এডভোকেট ছিলেন।
সিলেটের বিশ্বনাথের বিশিষ্ট সমাজ সেবক মরহুম মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট তজম্মুল আলীর সন্তান হেলাল আবু শেখ বাংলাদেশে এইচ এসসি অধ্যয়নকালে যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী হন। তিনি নিউইয়র্ক সিটি কলেজ অব টেনোলজি থেকে কম্পিউটার ইনফরমেশন বিষয়ে ব্যাচেলর করেন। এ কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি দক্ষিণ এশিয়ানদের মধ্যে সর্ব প্রথম স্টুডেন্ট গভর্ণমেন্ট এসোসিয়েশনের ভিপি নির্বাচিত হন। পরে ব্রুকলীন কলেজ থেকে গণিতে মাস্টার্স করেন। এর পর নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব এডুকেশনের অধীনে পাবলিক স্কুল শিক্ষক হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন। ২০১৩ সালে সিটি কাউন্সিলম্যান পদে নির্বাচনের প্রাক্কালে শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন তিন সন্তানের জনক হেলাল শেখ। সে থেকে পূর্ণকালীন রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। হেলাল আবু শেখের স্ত্রী ডা. তানিয়া মুকিত শেখ ব্রঙ্কসের মন্টিফিয়ার হসপিটালের এটেন্ডিং ফিজিশিয়ান।