নিউইয়র্ক: প্রাণের জোয়ারে নতুন বাংলা বর্ষবরণ করলেন নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশীরা। রোববার ছিলো পহেলা বৈশাখ। বাংলা ১৪২৬ সাল বরণ করে নিতে রং বে রং-এর সাথে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে প্রবাসীরা নানার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বিশেষ করে এনআরবি ওয়াল্ডওয়াইড’ আয়োজিত দু’দিনের ‘টাইম টেলিভিশন বৈশাখী মেলা’য় প্রবাসীদের ঢল নামে। গত শনি ও রোববার জ্যাকসন হাইটসের পিএস ৬৯ মিলনায়তনে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বিপা, ড্রামা সার্কল, বাপা, আনন্দধ্বনী, জেবিবিএ, নিউ ডেমোক্র্যাটিক ওমেন্স ফোরাম সহ বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করে।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে আয়োজিত টাইম টেলিভিশন বৈশাখী মেলা গত ১৩ এপ্রিল শনিবার বিকেল থেকে শুরু হয়ে পরদিন রোববার শেষ হয়। এই মেলার উদ্বোধন করেন সঙ্গীতজ্ঞ মুত্তালিব বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফায়জুননেসা।
অনুষ্ঠানে মুত্তালিব বিশ্বাস বলেন, যারা মেলায় এসেছি আমরা চেহারা ও মনে প্রাণে বাঙালী। মেলায় এসে খুব ভালো লাগছে। দেশ থেকে এত দূরে থেকেও আমরা বাঙালীয়ানার টানে এত বর্ণাঢ্য মেলার আয়োজন করতে পারি।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, পয়লা বৈশাখ একটি সর্বজনীন অনুষ্ঠান। এতে জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে এসে এ বিষয়টি দেখে আমার ভালো লেগেছে। আমি চাই আপনাদের মতো অনুষ্ঠান নিউইয়র্কে বা সব জায়গায় আরও বেশি বেশি করে হোক।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা বলেন, এখানে এসে দেখলাম নতুন প্রজন্মের অনেকে এই মেলায় এসেছে। এমনকি বেশ কিছু আমেরিকানও এসেছেন। এ ভাবেই আমাদের সংস্কৃতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে। আমি আশা করব আগামী বছর আপনারা ইউনেস্কো স্বীকৃত মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করবেন।
মেলার আমন্ত্রিত অতিথি ও মেলার টাইটেল স্পন্সর টাইম টিভির প্রধান নির্বাহী (সিইও) আবু তাহের বলেন, আমরা চাই আমাদের সংস্কৃতি নতুন প্রজন্ম এবং মূলধারার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক। এ জন্যই আমরা এ মেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি।
উদ্বোধনী পর্ব উপস্থাপনায় ছিলেন বৈশাখ উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক তোফাজ্জল লিটন। মেলার সার্বিক তত্তাবধানে ছিলেন বিশ্বজিৎ সাহা।
মেলার ২য় দিন ছিল কবিতায় বর্ষ বরণের আয়োজন। শ্যামলিমা শ্যামার সঞ্চালনায় এতে অংশ নেন প্রবাসী আবৃত্তিকার শরফুজ্জামান মুকুল, ড. ফারুক আজম ও গোপন সাহা। চর্যাপদ থেকে কবিতা পাঠ করেন শিরীন বকুল। এছাড়াও মেলায় ছিল বাঙ্গালীর পোষাক পরিধান প্রতিযোগিতা, ছিল নাচ, এবং লোক সংগীত।
মেলার সাংস্কৃতিক পর্বের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী ফেরদৌসী আরা। এছাড়াও প্রবাসের বিভিন্ন সংগঠন ও জনপ্রিয় শিল্পরা সঙ্গীত, নৃত্য পরিবশেন ও আবৃত্তি করেন। মেলার বিশেষ আকর্ষণ র্যাফেল ড্রতে বিশেষ পুরষ্কার ছিলো ‘নিউইয়র্ক-ঢাকা’ রিটার্ন এয়ার টিকিট। মেলার অনুষ্ঠানমালা ছিলো সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে এই মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে। মেলায় পোশাক-গয়নার স্টলসহ মোট ২৭টি স্টল ছিলো। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।