শিগগীরই নিউইয়র্ক-ঢাকা শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি

0
91

নিউইয়র্ক :
নিউইয়র্ক ষ্টেট সিনট প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরের অংশ হিসেবে শিগগীরই তারা ‘নিউইয়র্ক-ঢাকা শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি’ শুরু করতে যাচ্ছেন। সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক (কিউনি) এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক (সুনী)-এর সঙ্গে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেতুবন্ধন করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি চমৎকার দেশ। আগামী দেশটির সম্ভাবনাও বিপুল। সময়-সুযোগ পেলে তারা আবারো বাংলাদেশ সফর করবেন, বাংলাদেশ সফর তাদের চিরদিন মনে থাকবে। দেশটির আতিথিয়েতাও মনে রাখার মতো।
সিটির ব্রঙ্কসের আল আসকা রেষ্টুরেন্টে গত ২৪ নভেম্বর রোববার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্ক ষ্টেট সিনট প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উপরোক্ত তথ্য জানান। ষ্টেট সিনেটের লুইস সেপুলভেদার নেতৃত্বে ৫জন ষ্টেট সিনেটর সদস্যরা সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেন। অপর সদস্যরা হলেন- জন ল্যু, জেমস স্কুফিস, লিরয় কমরি এবং কেভিন এ পার্কার। সংবাদ সম্মেলনে লুইস সেপুলভেদা, জন ল্যু ও লিরয় কমরি তাদের সফরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি লিডার এটর্নী মঈন চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহম্মদ শাহ নেওয়াজ ও বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুর রহীম হাওলাদার। তারা ব্যক্তিগতভাবে স্টেট সিনেটরদের সাথে বাংলাদেশ সফরসঙ্গী ছিলেন। তারাও তুলে ধরেন তাদের সফরের অভিজ্ঞতার কথা।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে নিউইয়র্কের উল্লেখিত পাঁচজন স্টেট সিনেটর বাংলাদেশ সফর করেন। গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে তারা গত ২০ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তারা জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, সাবেক মন্ত্রী ও পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব:) ফারুক খান সহ রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরিদর্শন করেন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প, সিলেটের ইস্পাহানী চা বাগান, সিলেট এবং নারায়ণগঞ্জের দু’টি তৈরী পোষাক কারখানা। পাশাপাশি মতবিনিময় করেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এবং সিলেট চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। এসময় উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর পাশাপাশি নিউইয়র্কের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাত নিয়ে আলোচনা করেন। সপ্তাহব্যাপী ওই সফরের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেললেন আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ষ্টেট সিনেটর লুইস সেপুলভেদা বাংলাদেশ সফরকে একটি ঐতিহাসিক সফর হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সরকারের আতিথেয়তার প্রশংসা করে বলেন, এই সফর তার জীবনে স্মরণীয় সফর হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের মানুষের আতিথিয়েতাও স্মরণীয়।
লুইস সেপুলভেদা জানান, বাংলাদেশ সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিলো নিউইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশী কমিউনিটির জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের আরো ভালোভাবে মূল্যায়ন করার সুযোগ সৃষ্টি করা। সেদিক থেকে তাদের সফর সফল হয়েছে। তিনি বলেন, কিউনি এবং সুনী’র সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটকে কিভাবে যুক্ত করে শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি চালু করা যায় তার রুপরেখা প্রণয়ন চলছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যেমন এখানে আসতে পারবে তেমনি নিউইয়র্কের অন্যান্য কমিউনিটির শিক্ষার্থীরা যেনো বাংলাদেশে গিয়ে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার পরিধি বাড়াতে পারে- সেটাই তাদের লক্ষ্য।
ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়নের যে কর্মযজ্ঞ চলছে তা দেখে তিনি অভিভূত। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়। নিরাপত্তা বলয়ের সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে একা ঢাকা শহর ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে জন ল্যু বলেন-‘ইটস এ্যা অ্যামেইজিং কান্ট্রি, আই ওয়ান্ট টু গো ব্যাক এ্যাগেইন’।
স্টেট সিনেটর লিরয় কমরি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আথিয়তায় মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি ঢাকার ট্রাফিক জ্যামের কথা উল্লেখ করে বলেন, ঢাকার ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম দেখার পর থেকে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিউইয়র্কের ট্রাফিক জ্যাম নিয়ে তিনি আর কখনো কোনও অভিযোগ করবেন না। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড এবং নির্মানাধীন মেট্রো রেলের কথা উল্লেখ করে বলেন, ঢাকায় চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড শেষ হলে বহুল ঘনবসতি শহর ঢাকার মানুষ ট্রাফিক জ্যাম থেকে মুক্তি পাবে এবং দেশটি সকল ক্ষেত্রেই একটি সম্ভাবনাময় দেশ।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে লুইস সেপুলভেদা জানান, নিউইয়র্কের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশ দিবসে কমিউনিটির জন্য সারপ্রাইজ আসছে। তবে তিনি অবশ্য পরিষ্কার করে বলেননি- কি ধরণের ঘোষণা আসছে। নিউইয়র্কের রাজধানী আলবেনী-তে প্রতিবছর ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। ২০২০ সালের বাংলাদেশ দিবসে বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য এই ‘সারপ্রাইজ’ দেয়া হবে বলে জানান লুইস সেপুলভেদা। ইউএনএ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here