করোনার ভয়াবহতায় চীন, কর্তব্যরত চিকিৎকের মৃত্যু

0
79

বাংলা খবর ডেস্ক: করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চীনের উহান শহরে এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। সময়ে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। গত কয়েকদিনে কয়েক হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের দম ফেলারও সময় নেই। এখন পর্যন্ত সেখানে ৫৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

শনিবার সকালে লিয়াং উডং নামে ৬২ বছর বয়সী এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে বলে চাইনিজ গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ওই একই দিনে আরও পরের দিকে অপর এক চিকিৎসক যিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন।

তবে জিয়াং জিযান নামে ৫১ বছর বয়সী ওই চিকিৎসকের মৃত্যু শুধু হার্ট অ্যাটাকের কারণেই হয়েছে নাকি এর সঙ্গে করোনাভাইরাসের সম্পৃক্ততা রয়েছে সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছে চীনা সরকার। এর মধ্যেই উহানে ১২শ চিকিৎসা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রাণঘাতী নতুন এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের নববর্ষের অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে করা এক বিশেষ বৈঠকে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দেশ মারাত্মক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

উহান শহরে প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা যাওয়ার পর চীনের অন্যান্য শহরেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। তবে সরকার যতটা বলছে তার চেয়েও পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে এক চিকিৎসা কর্মী দাবি করেছেন।

উহান শহরের হাসপাতালে কর্মরত এক নার্সের দাবি, সেখানে ইতোমধ্যেই এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মাস্ক পরে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছেন ওই নার্স। তিনি বলছেন, সরকারিভাবে যে সংখ্যা বলা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেশি।

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের পক্ষে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। একাধিক শহরে ঢোকা এবং শহর থেকে বের হওয়ার ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হলেও ইতোমধ্যেই অনেক শহরেই এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিপল’স ডেইলি জানিয়েছে, জরুরি সেবাদানের লক্ষ্যে ১৩শ শয্যাবিশিষ্ট দ্বিতীয় একটি হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু করা হবে এ সপ্তাহের মধ্যেই। এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতালের নির্মাণকাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।

চীনে প্রাদুর্ভাব ঘটলেও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রেও লোকজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। সম্প্রতি ইসরায়েলে এক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করছে কর্তৃপক্ষ।

এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো হলো জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। সেভার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ঘরানার এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here