মানবপাচার বন্ধ না হওয়ার কারণ

0
113

বাংলা খবর ডেস্ক: দালালদের আইনের আওতায় আনতে না পারার পাশাপাশি মামলার বিচারে ধীর গতির কারণে কক্সবাজার থেকে সমুদ্র পথে মানবপাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে আদালতে সাক্ষী না আসায় গত ৯ বছরে দায়ের করা ৬ শতাধিক মামলার একটিরও নিষ্পত্তি হয়নি। এমনকি চিহ্নিত কয়েকশ’ দালাল এখনো রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতায় পুরো অঞ্চলটি মানবপাচারের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূল দিয়ে মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের ঘটনা নতুন কিছু নয়। ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এ নৌ-রুটে মানবপাচারের ইতিহাস ছিল ভয়াবহ। ২০১৫ সালের মে মাসে থাইল্যান্ডে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর বিষয়টি বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসে। শেষ পর্যন্ত দালালদের বিরুদ্ধে মামলা, অভিযান সব মিলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে মানবপাচারের ঘটনা।

কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও গত ১১ ফেব্রুয়ারি রোহিঙ্গাবাহী ট্রলারডুবিতে ২১ জনের মৃত্যু আবারো ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয় প্রশাসনকে। মানবপাচার আইনে বিচারাধীন ৬৩৭টি মামলায় সাক্ষীর অভাবে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘসূত্রিতার।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অরূপ বড়ুয়া তপু বলেন, সাক্ষীরা আদালতে এসে সাক্ষী প্রদান করছে না। যার কারণে মানব পাচাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া যাচ্ছে না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়ার পর আবারো মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের ঘটনা শুরু হয়। পুলিশের তথ্য মতে, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাচারের ঘটনা ঘটেছে ২৮টি। আর এসব ঘটনায় উদ্ধার হয়েছে ৭১৩ জন রোহিঙ্গা। মামলায় আসামি হিসাবে থাকা ১৩৭ দালাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছে ৬৯ জন। বাকিরা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলন সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, যা এমন কাজে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া না গেলে এটি বন্ধ করা যাবে না।

মানবপাচার বিরোধী টাস্কফোর্স সদস্য দিদারুল আলম রাশেদ বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

এ অবস্থায় মানবপাচার বন্ধে আবারো দালালদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরুর পরিকল্পনা করছে বলে জানালেন কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন। পুলিশের তালিকা অনুযায়ী, কক্সবাজারে মানবপাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত দালাল রয়েছে ৩শ’ জন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here