একদিকে ভোট সুষ্ঠ হয়েছে তা জনগণের কাছে তুলে ধরা অন্যদিকে বিদেশী বন্ধু দেশগুলোর কাছে প্রমাণ করা। আবার নির্বাচনের ভোটকে কেন্দ্র করে কেউ যেন ইস্যু বানিয়ে আন্দোলনের করতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে। এনিয়ে যদি আন্দোলন হয় তা মোকাবেলা করাই হবে আওয়ামী লীগের প্রধান চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি গত দশ বছরে বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ধারা রয়েছে তা অব্যাহত রাখা। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পসহ মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ আগামী পাঁচ বছরে যদি সম্পূর্ণ হয় তাহলে দেশ যেমন বহুদূর এগোবে তেমনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে।

তাই একাদশ বিজয়ের উচ্ছ্বাসে গা ভাসাবার সময় আওয়ামী লীগের নেই। আওয়ামী লীগের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ আর একটি কঠিন পরীক্ষা। যে পরীক্ষায় জয়ের বিকল্প কিছুই নেই।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গননায় কাঙ্খিক্ষত ফল পয়েছে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে যে আওয়ামী লীগের জয় হবে, এ নিয়ে সম্ভবত কারোরই কোন সন্দেহ ছিলো না। বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারাও ভালো করেই জানতেন, এই নির্বাচনে তাদের জয়ের কোন সম্ভাবনা নেই।

নির্বাচনে জয়ের মধ্যে শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ এদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল। জাতীর পিতার নেতৃত্বে বাঙ্গালীর মুক্তির সংগ্রামের পথ প্রদর্শক আওয়ামী লীগ। তাই এই দলটির কাছে জনগনের প্রত্যাশা এমনিতেই অনেক বেশি ছিলো সব সময়।

টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকা একটি দলের নেতাকর্মীর মধ্যে অহংকার পেয়ে বসতে পারে। কেউ কেউ জনগণকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে পারেন। অনেকেই মনে করতে পারেন ক্ষমতা মানে সব কিছু আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে। এই মানসিকতা কোনভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। নেতা-কর্মীদের উদ্যত আচরন আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিগত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ যেমন অনেক ভালো কাজ করেছে তেমনি অনেকগুলো বিষয়ে সমালোচিত হয়েছে।
তৃত্বীয় মেয়াদে ইশতেহার অনুযায়ী আওয়ামী সরকারকে অবশ্যই সমালোচনার ইস্যুগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে। ব্যাংকিং খাতের অনিয়মগুলো দুরকরা, গুম, খুনের, গ্রেফতার অভিযোগগুলোর ব্যাপারে সহিষ্ণুতার নীতিতে থাকা। আওয়ামী লীগকে দুর্নীতি বন্ধে কঠোর হতে হবে। এমনকি নিজের দলের কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগকে সুশাসনের একটা নজির সৃষ্টি করতে হবে। যে সুযোগ জনগণ তাদের দিয়েছে।

এই দিকে ইশতেহারে দেওয়া ওয়াদাগুলো পূরণ এবং বাস্তবায়নই নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ বলেছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তবে নির্বাচনে পরাজয়ে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টকে নিজেদের দোষ দেখছে ওবায়দুল কাদের। বলেন, এবার তাদের পরাজয়টা ছিল অবধারিত। পরাজয়টা হয়তো কোনও কোনও জায়গায় অস্বাভাবিক মনে হয়, সেটাও তাদের ভুলের কারণে।

আগামীর পথ চলা ও দলটির পরিচালনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নিজেদের ভুল, দুর্বলতা, সাংগঠনিক দুর্বলতা সব বুঝতে পেরেছি। নতুন বছরে সেগুলো কাটিয়ে উঠে পূর্ণ উদ্যোমে কাজ করবো। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নেতাকর্মীরা ধৈর্য্য ধরে, মাথা ঠান্ডা করে কাজ করবেন। কেউ যেন বাড়াবাড়ি না করে, প্রতিপক্ষের প্রতি প্রতিহিংসা পরায়ণ হবেন না।

সুত্র: আমাদের সময়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here