অনেক অভিযোগ ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর বিরুদ্ধে। বেপরোয়া জীবনে অনেক পুরুষকেই কাছে টেনেছেন। বিয়ের আগে-পরে কোনো পরিবর্তন হয়নি তার। স্বামীর অগোচরে অন্য পুরুষের সঙ্গী হয়েছেন দেশে-বিদেশে। গ্রেপ্তারের পর এসব বিষয়েই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য দিয়েছেন আলোচিত এই নারী। পরকীয়া ও বেপরোয়া জীবনের অনেক কথাই স্বীকার করেছেন মিতু। এই নারীর আমলনামার অনেকটাই এখন পুলিশের হাতে। সেই সঙ্গে মিতুর ঘনিষ্ঠদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিতু উগ্র জীবনযাপনসহ নানা বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এ সব তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।’
মিতু কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার আনিসুল হকের মেয়ে। মায়ের নাম সেলিনা শামীম। ছেলেমেয়েকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন মিতুর মা। বাবা থাকেন চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায়। ২০১৬ সালে ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর সঙ্গে বিয়ে হয় ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশের। এর আগে সাত বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাদের। আত্মহত্যার আগে নিজের ফেসবুক আইডির টাইমলাইনে মিতুর লাগামহীন জীবন সম্পর্কে লিখেছেন ডা. আকাশ। এমনকি বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে ডা. মিতুর একান্ত মুহূর্তের কিছু ছবিও পোস্ট করেন তিনি। স্ত্রীর প্রতি আকাশের আবেগঘন স্ট্যাটাস এখন কাঁদাচ্ছে তার পরিবার, স্বজন থেকে শুরু করে পরিচিত-অপরিচিত অসংখ্য মানুষকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ২০০৯-২০১০ সেশনের ছাত্রী তানজিলা চৌধুরী মিতু। ইন্টার্নশিপ করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে পরিচয় হয় আকাশের সঙ্গে। তারপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। ওই সময়ই একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন মিতু। বিয়ের পরও বিভিন্নজনের সাথে সেই সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন। এমনকি পড়াশোনার জন্য বিদেশে অবস্থানকালেও একাধিক ব্যক্তির সাথে বিবাহবহির্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মিতু।
এমনকি শুধু মিতু নন, তার পরিবারের বিরুদ্ধেও উঠছে নানান অভিযোগ। মিতুর উগ্র জীবনযাপনে সমর্থন, আকাশকে মানসিক নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে মিতুর পরিবারের বিরুদ্ধে। আকাশের ছোট ভাইয়ের বন্ধু তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগ করেন, আকাশের আত্মহত্যার জন্য যতকুটু মিতু দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী তার পরিবার। তাদের আমানুষিক নির্যাতনের কারণেই আকাশ আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, মিতুর ছোট ভাই আরমান লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর নিজেদের আর্থিক অবস্থা গোপন করে ৮০ লাখ টাকা উত্তোলন করে। মিতুদের আর্থিক অবস্থা না জেনে ওই সময় তিনিসহ কয়েকজন টাকা উত্তোলনের নেতৃত্ব দেন। দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্ররা এ টাকা উত্তোলন করে। কিন্তু আরমানের চিকিৎসার অর্ধেক টাকায় চিকিৎসা ব্যয় না করে নিজেরাই আত্মসাত করেন।