ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শতকার ৩৪ শতাংশ শিশু। আর নারীদের সংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ এই তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অধিদপ্তরের ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সরকারি ,আধা সরকারি ও বেসরকারি মোট ৪৭টি হাসপাতাল থেকে পাওয়া ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর হিসাব তথ্যে জানা যায়।
তথ্যে দেখা যায় চলতি বছর ২০১৯ সালে জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে চলতি মাসের ১৩ জুলাই পর্যন্ত ৩ হাজার ৬শত ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে এসেছে। আর জুলাই মাসে একহাজার একশত ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী লিঙ্গভিত্তিক পরিচয় বিশ্লেষণ করেছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এদের মধ্যে ৩শত ৫৮ জন শিশু ডেঙ্গু রোগী। কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব প্রাপ্ত ডা. আয়শা আক্তার বলেন শিশুর পরিস্থিতি দেখতে পৃথকভাবে হিসার রাখা শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে পর্যায় ক্রমে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত সব রোগীর লিঙ্গ ভিত্তিক পরিচয় রাখা হবে। ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ডেঙ্গুর ব্যপকতা বাড়ায় বিবেচনায় রেখে গত বছর থেকেই ঢাকা শিশু হাসপাতাল আলাদা ভাবে ডেঙ্গুর হিসাব রাখছে। তাদের হিসাব চলছে ২০১৮ সালের ৪জুলাই থেকে চলতি বছরের ৭ই জুলাই পর্যন্ত ৬শত ৯৮ জন শিশু ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছে। এদের মধ্যে ৫৩শতাংশ শিশুর বয়স ৫ বছরের কম। আর মোট আক্রান্তে ৯৮ শতাংশের বয়স ১২ বছরের নিচে। চলতি বছরও ভর্ত্তি হয়েছে একশত ১২জন শিশু। এর মধ্যে গত ১ শে জুন সুত্রাপুরের ১২ বছরের একটি শিশু মারা গেছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। তবে অনুসন্ধানে জানা যায় শিশু মৃত্যুর হার সরকারি হিসাবে এই শিশু মৃত্যুর হিসাব নেই।
তবে ডেঙ্গু জ্বরে দেশে যত মানুষ মারা যাচ্ছে, তার অর্ধেকের বেশি শিশু। যেসব রোগী দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেঙ্গু দেশ থেকে যাবে না। তাই সচেতনতা ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ মোকাবিলা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কাজী তারিকুল ইসলাম’র সাথে কথা তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। রোগের ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। এতে আগের চেয়ে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।
ঢাকায় আরও ৭৩ জন গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
সব মিলিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৭শত ২৪ জনের ও বেশি। রোগীর সংখ্যা ৩,৭২০ জনেরও বেশি। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে ২০ জনের আক্রান্ত হবার খবর মিলেছে। যদিও আক্রান্তদের মধ্যে ২,৯০০ জনই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।
তবে পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয় সেজন্য এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের জন্য বাসাবাড়ী থেকে শুরু করে সবার আরও সচেতনতার ওপর জোর দেন তিনি। মশা নিয়ে গবেষণা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তার মতে, এবার সচেতন হওয়া বেশি জরুরি কারণ কয়েকটি কারণে এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে।
আবার ঢাকাসহ সারাদেশে পানির স্বল্পতার কারণে মানুষ বালতি কিংবা ড্রামে পানি জমিয়ে রাখে। আর বিভিন্ন ধরণের নির্মাণ কাজের সাইটগুলোতে চৌবাচ্চা, ড্রাম এডিস মশার বিস্তারে প্রধাণ ভূমিকা পালন করছে।