ধানমণ্ডিতে জোড়া খুন : পুলিশের জিম্মায় আটজন

0
80

বাংলা খবর ডেস্ক: রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকায় মনির উদ্দিন নামের এক শিল্পপতির ফ্ল্যাটে দুই নারীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আটজনকে জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এই ঘটনায় মামলারও প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ।

ওই ঘটনায় নিহত গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম (৬৫) ও গৃহকর্মী দিতির (১৬) লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রয়েছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত লাশগুলোর ময়নাতদন্ত হয়নি।

ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমরা ওই বাড়ির দারোয়ান, কেয়ারটেকার, ইলেকট্রনিক মিস্ত্রিসহ কয়েকজনকে জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আমরা ওই বাসার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।’

ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, এটা একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যদিও ওই বাসায় গিয়ে আমরা আলমরি ও ড্রয়ার ভাঙা অবস্থায় পেয়েছি। ডাকাতির কারণে দুজনকে গলা কেটে হত্যার বিষয়টি চিন্তার। সেজন্য আমরা পুরো বিষয়টি আরো ভালভাবে খতিয়ে দেখার চেষ্টার করছি।’

থানার দায়িত্বরত ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) অমৃতা চাকমা বলেন, ‘এই ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, তবে প্রস্তুতি চলছে। কয়েকজন আছেন থানায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

শিল্পপতি মনির উদ্দিন বলেন, ‘বাসা থাকা মোবাইল, টাকা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যাচ্ছে না। তবে শুধু চুরি-ডাকাতির জন্য এই রকম একটি ঘটনা ঘটেছে তা পরিষ্কার করে এখুনি বলা মুশকিল। তদন্ত করছে পুলিশ। দেখা যাক কী হয়।’

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ধানমণ্ডির ১৫ নম্বর সড়কের ২১ নম্বর বাড়িতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশান (পিবিআই) সদস্যদের ঢুকতে দেখা যায়। দলের সদস্য শরিফ আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা আমালত সংগ্রহ করতে এসেছি। এ ছাড়া ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।’

আফরোজা বেগমের বোনের ছেলে মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ওই বাসার মোট আটজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরা সবাই বাসার দারোয়ান, মিস্ত্রি আর কেয়ারটেকার আছেন। এ ছাড়া মনির উদ্দিনের দেহরক্ষী বাচ্চুকে আটক করা হয়েছে। যে ঘরে তাদের হত্যা করা হয়েছে ওই ঘরে এখনো বাসার কেউ ঢোকেনি। পুরো ঘরে এখনো রক্ত রক্ত! বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর লোকজন আসছেন বাসায়। তারা আলামত সংগ্রহ করছেন।’

আফরোজা বেগম লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি ডায়াবেটিসেও আক্রান্ত ছিলেন বলে জানান মোশারফ হোসেন। তিনি আরো বলেন, ‘উনার কোনো শত্রু নেই। রোগের কারণে সারাক্ষণ ঘরেই থাকতেন। তাহলে কেন তাঁকে উদ্ধার করা হলো।’

আর যদি শুধু জিনিসপত্র বা টাকা নিতেই আসে তাহলে তো সেগুলো নিয়ে গেলেই পারত, এর জন্য তাদের হত্যা করবে কেন- এই প্রশ্নও রাখেন মোশারফ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মনির উদ্দিন একজন শিল্পপতি। তিনি তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর একজন পরিচালক। তিনি টিনটেক নামের একটি গার্মেন্টসের মালিক। ছয়তলা ভবনটির এফ-৪ ফ্ল্যাটে এই ঘটনা ঘটেছে। ফ্ল্যাটে মনির উদ্দিনের শাশুড়ি ও গৃহকর্মী থাকতেন ওই ফ্লাটে। ভবনটিতে মনিরের মালিকানাধীন মোট চারটি ফ্ল্যাট আছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খবর পেয়ে ধানমণ্ডি থানার পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। ফ্ল্যাটের দুটি আলাদা কক্ষ থেকে দুজনের লাশ পাওয়া যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here