আবরার হত্যার ভিডিওচিত্র দেখাল পুলিশ

0
56

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার চার্জশিট প্রস্তুত করে আদালতে জমা দিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এতে মোট ২৫ জনকে জড়িত উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১১ জন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, একক কোনো কারণে আবরার হত্যাকাণ্ডটি হয়নি। সে শিবির করে কি-না, হত্যার পেছনে এটি একটি মাত্র কারণ। কিন্তু যারা তাকে হত্যা করেছে তারা এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আবরার ফাহাদ রাব্বি হত্যার চার্জশিট ও তদন্তের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলন শেষে তদন্ত দলের পক্ষ থেকে একটি স্কেচ ভিডিও দেখানো হয়। সেই ভিডিওতে তুলে ধরা হয় আবরার হত্যার নৃশংস দৃশ্য। প্রত্যক্ষদর্শী, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও সাক্ষীদের দেয়া তথ্যমতে ভিডিওটি তৈরি করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তদন্ত দল।

২ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ভিডিটিতে প্রথমে আবরারের প্রাণের বুয়েট ক্যাম্পাস ও তার শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমটি দেখানো হয়েছে। হলের করিডোরে আবরারের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে তার বড় ভাইকে (ছাত্রলীগের বড় ভাই) জানাচ্ছেন তার এক রুমমেট।

৪ অক্টোবর আবরারের বিষয়ে হলের ক্যান্টিনে মিটিং করে অভিযুক্তরা। এর পরপরই হলের গেস্টরুমে মিটিংয়ে বসে তারা আবরার ফাহাদকে নিয়ে আলোচনা করে।

৬ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বড় ভাইয়ের নির্দেশে কয়েকজন আবরারকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ২০১১ নম্বর রুমে যেতে বলেন। সেদিন আবরারকে তার ল্যাপটপ ও মোবাইলসহ ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই রুমে তাকে ফ্লোরে বসিয়ে একটি পক্ষ জিজ্ঞাসাবাদ করে যে, ‘হলের কেউ বিতর্কিত ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কি না?’ আরেকপক্ষ তার ল্যাপটপ ও মোবাইল চেক করছে।

এ সময় হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। যন্ত্রণায় মাটিতে বমি ও প্রস্রাব করে দেন আবরার। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ২০১১ থেকে ২০০৫ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০০৫ নম্বর রুমে তিনি আরও অসুস্থ হলে রুম থেকে বের করে তাকে সিঁড়ির পাশে শুয়ে রাখা হয়। দীর্ঘক্ষণ সেখানে পড়ে থাকার পর বুয়েটের চিকিৎসক এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর একে একে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের চিত্র দেখায় ডিএমপি।

ভিডিওর বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আদালত সাধারণত সাক্ষ্য হিসেবে এ ধরনের ভিডিও গ্রহণ করেন না। তবে আদালত যদি অনুমতি দেন তাহলে আমরা এটা জমা দেব।’

এর আগে ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে হত্যা করা হয়। ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ওই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

বুধবার এ ঘটনায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে ডিবি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here