বাংলা খবর ডেস্ক: ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ভুলবশত ইউক্রেনের বিমানে আঘাত হানে বলে দাবি করেছে মার্কিন মিডিয়া। বুধবার ইউক্রেনীয় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ তেহরানের বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার ঠিক কয়েক মিনিটের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়ে যায়, এতে ১৭৬ জন যাত্রীর সবাই নিহত হন।
বিবিসি জানায়, ইরাকে একটি মার্কিন ও আরেকটি যৌথবাহিনীর সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
ইরাকে মার্কিন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হত্যার প্রতিক্রিয়ায় এই ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়েছিল ইরান। এতে অন্তত ৮০ জন মার্কিন সেনা নিহত হয় বলে দাবি করে তেহরান।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিএস জানায়, দুইটি সন্দেহজনক ‘ইনফ্রারেড ব্লিপস’ (সিগন্যাল) স্যাটেলাইটের মাধ্যম শনাক্ত করা গেছে। এরপরেই একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়া নির্মিত টর মিসাইল ইউক্রেনের বিমানটিতে আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, বিমানটির বিধ্বস্ত হওয়া নিয়ে তার ‘সন্দেহ’ রয়েছে।
একইভাবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও জানান, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে গোয়েন্দারা তাকে জানিয়েছেন। বিমানটিতে নিহত যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন কানাডার ৬৩ জন নাগরিক।
বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্স ইরান বিমানটির প্রস্ততকারক মার্কিন কোম্পানি বোয়িং অথবা যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে অস্বীকৃত জানানোর পর এমন দাবি তুলে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম। সাধারণত মার্কিন সংস্থা বোয়িং সম্পর্কিত যে কোনও আন্তর্জাতিক তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহণ সুরক্ষা বোর্ড ভূমিকা রাখে।
বৈশ্বিক বিমান বিধিমালার অধীনে, এই ঘটনার তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার ইরানের রয়েছে। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ তদন্ত কাজের জন্য বোয়িংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এর আগে তেহরানে অবস্থিত ইউক্রেন দূতাবাস জানায়, বিমানের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাবার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর সাথে ‘সন্ত্রাসী’ কাজের কোনো সম্পর্ক নেই।
ইরানের সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (সিএও) প্রধান আলী আবেদজাদেহও একই দাবি করেন। যদিও তদন্তের আগে এমন মন্তব্য আনুষ্ঠানিক নয় বলে পরবর্তীতে দাবি করেন ইউক্রেনের দূতাবাস।
এদিকে ইরানী গণমাধ্যম বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে প্রযুক্তিগত সমস্যাকে দায়ী করছে এবং বিমানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে তারা বলছে যে কোনও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়নি।
আলী আবেদজাদেহ বলেন, ‘বিমানবন্দর ছাড়ার পরপরই কোনো ধরনের সমস্যার কারণে এটি পেছনে ফিরে আসার সময় বিধ্বস্ত হয়।’
তিনি দাবি করেন, বিধ্বস্ত হওয়ার আগমুহূর্তে বিমানটিতে আগুন জ্বলতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আবেদজাদেহ বলেন, ‘বিমানটিকে মিসাইল আঘাত হানবে, বৈজ্ঞানিকভাবে এটি অসম্ভব। এ জাতীয় গুজব অযৌক্তিক।’