উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতির উদযাপন করছে বাংলাদেশ : শোভাযাত্রা

0
669


বাংলা খবর: স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের সাফল্য শোভাযাত্রা করে উদযাপন করতে যাচ্ছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উদযাপনের উদ্বোধনী পর্বে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোক উৎসব। সেই অনুষ্ঠানেও সরকার প্রধান শেখ হাসিনা যোগ দেবেন বলে এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়।
বিশ্ব ব্যাংকের বিবেচনায় বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পর এখন জাতিসংঘের মাপকাঠিতেও বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটল।

জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এই স্বীকৃতির চিঠি সম্প্রতি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করে

জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এই স্বীকৃতির চিঠি সম্প্রতি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করে

জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি), উন্নয়নশীল ও উন্নত এ তিন পর্যায়ে বিবেচনা করে।

১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক (ইভিআই) এই তিন শর্ত পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠতে যাচ্ছে।

এই স্বীকৃতি উদযাপন উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরপরই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখীসমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে সর্বাত্মক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে সে প্রচেষ্টা থামিয়ে দেয়।

“জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে বলেন, “ভিশন-২০২১ এ আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সবার প্রচেষ্টায় নির্ধারিত সময়ের তিন বছর পূর্বেই আমরা এ লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছি। এ অর্জন সকলের, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের।”

রাজধানীর নয়টি স্থান থেকে ৫৭টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে শোভাযাত্রা করে বিকালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে।

শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের অফিস আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে। বারণ করা হয়েছে কোনো প্রকার দাহ্যবস্তু বহন করার বিষয়ে।

অনুষ্ঠানটি যেন বাইরে থেকেও দেখা যায়, সেজন্য স্টেডিয়ামের বাইরে ২০টি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হবে বলেও জানানো হয় তথ্য বিবরণীতে।

সব শোভাযাত্রাকে মন্ত্রণালয় নির্ধারিত গতিপথ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

ডিএমপি বলেছে, শোভাযাত্রার কারণে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং চারপাশের সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হবে।

“ওই সময় শাহবাগ, কাকরাইল মসজিদ, নাইটিংগেল, ফকিরাপুল, শাপলা চত্বর, গুলিস্তান, ফুলবাড়ীয়া, চানখারপুল, বকশীবাজার, পলাশী, নীলক্ষেত অঞ্চল দিয়ে র‌্যালী এলাকায় গাড়ি প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাইভারশনের প্রয়োজন পড়বে। সর্বসাধারণকে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে র‌্যালি এলাকা এড়িয়ে চলার জন্য পরামর্শ দেওয়া গেল।”

শোভাযাত্রার গতিপথ

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সেতু বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, জাতীয় সংসদ সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সমবেত হওয়ার স্থান বাংলা একাডেমি ও সংলগ্ন এলাকা।

শোভাযাত্রাটি বাংলা একাডেমি-দোয়েল চত্বর-আব্দুল গণি রোড-জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পশ্চিম ফটক দিয়ে ঢুকবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমবেত হওয়ার স্থান শিল্পকলা একাডেমি ও মৎস্য ভবন সংলগ্ন এলাকা।

তাদের শোভাযাত্রাটি শিল্পকলা একাডেমি-মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেস ক্লাব-পল্টন-বায়তুল মোকাররম হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর ফটক দিয়ে ঢুকবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সমবেত হওয়ার স্থান শিশু একাডেমি ও দোয়েল চত্বর সংলগ্ন এলাকা।

শোভাযাত্রাটি শিশু একাডেমি-আবদুল গণি রোড-জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর ফটক দিয়ে ঢুকবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সমবেত হওয়ার স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এলাকা।

শোভাযাত্রাটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান-মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেস ক্লাব-পল্টন-বায়তুল মোকারম হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর ফটক দিয়ে ঢুকবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থাসমূহের সমবেত হওয়ার স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠ ও সংলগ্ন এলাকা।

শোভাযাত্রাটি দোয়েল চত্বর-আবদুল গণি রোড-জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পশ্চিম ফটক দিয়ে ঢুকবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সমবেত হওয়ার স্থান নগর ভবন এলাকা।

শোভাযাত্রাটি নগর ভবন-গোলাপশাহ মাজার-গুলিস্থান মোড়-রাজউক ভবন হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব ফটক দিয়ে ঢুকবে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সমবেত হওয়ার স্থান রমনা পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ।

শোভাযাত্রাটি মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেসক্লাব-পল্টন-বায়তুল মোকারম হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর ফটক দিয়ে ঢুকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সমবেত হবে বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর এলাকায়।

তাদের শোভাযাত্রাটি বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর-দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব ফটক দিয়ে ঢুকবে।

শিল্প মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন সংস্থাসমূহ সমবেত হবে শিল্প ভবন চত্বর এলাকায়।

শোভাযাত্রাটি শিল্প ভবন হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব ফটক দিয়ে ঢুকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here