অটিস্টিক হয়েও পিইসি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়া শিশু মারজুক। এছাড়া গানের পাশাপাশি নয়ন জুড়ানো ছবি আঁকতে তুলনা নেই তার। মানসিক বিকাশজনিত সমস্যা পেছনে ফেলে ঘরে এনেছে অসংখ্য পুরস্কার। পরিবার ও স্কুলের দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় মনোযোগী মারজুকের ঘরে শোভা পাচ্ছে তারই ক্যামেরায় তোলা সুন্দর ছবিও।
মারজুকের মা বলেন, যদি স্কুলে না যায় তবে তাদের অগ্রগতি মন্থর হয়ে যায়। তাই সরকার যদি ওদের জন্য আরও স্কুল তৈরী করে তাহলে ওদরে শিক্ষার পথ সুগম হবে।
এসব শিশুদের মানসিক বিকাশে বিশেষায়িত স্কুলের কোন বিকল্প নেই। তাইতো পরিবারে বিরামহীন সময় দেবার পাশাপাশি অভিভাবকরা দিনের উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় করছেন স্কুলেই। তবে শিশুদের মনের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে সবচেয়ে কৌশলী ভূমিকাটি পালন করছেন প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা।
ইপনা অটিজম স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাঈদা আলী সোমা বলেন, যার যতটুকু ল্যাকিংস আছে তার উপর ভিত্তি করে আমরা তাদের জন্য প্ল্যান করি।
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, দেশে অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। দিনদিন এ সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়লেও বাড়েনি পর্যাপ্ত স্কুল ও সহায়ক সুযোগ সুবিধা। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, জন্মের ১৮ মাস থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে এসব শিশুদের চিকিৎসা শুরু হলে তাদের অধিকাংশকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
একজন অভিভাবক বলেন, এখন অনেকটাই ভালো হয়ে গিয়েছে আমার সন্তান। এখন অনেকখানিই স্বাভাবিক সে।
পরিস্থিতির উন্নয়নে উন্নত বিশ্বের মত অটিস্টিক শিশুদের সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনার পরিকল্পনা সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের।
বিশ্লষকরা বলেন, অটিস্টিক শিশুদের মানসিক বিকাশে পরিবেশের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। পরিবার ও সামাজিকভাবে মূল্যায়ন পেলে এসব শিশুরা অপেক্ষাকৃত কম সময়ে সমাজের মূল ধারায় ফিরবে। আর সঙ্কট উত্তরণে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিদ্যালয় ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক বৃদ্ধির দিকেও জোর দিতে হবে।
ডা গোপেন কুমার বলেন, এটার সাথে একটু পরিবেশগত সমস্যা জড়িত আছে। কিন্তু জিনগত সমস্যার ব্যাপারটি বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করতে পারলে এর চিকিৎসা সম্ভব হবে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, সাধারণ স্কুলের সবটায় আমরা হয়ত পারব না, কিন্তু যেসব স্কুলে সুযোগ আছে সেখানে আমরা কাজ শুরু করতে পারব বলে আমাদের বিশ্বাস।