ভাড়ায় বাইক চালানো সংগ্রামী নারী শাহনাজ আক্তারের চুরি যাওয়া আয়ের অবলম্বন বাইকটি উদ্ধার হয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শাহনাজের স্কুটিটি উদ্ধার করে পুলিশ।

বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও ডিসি অফিসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শাহনাজ আক্তারকে তার স্কুটিটি হস্তান্তর করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গতকাল শাহনাজের মামলার পর তদন্ত ও অভিযানের সমন্বয় করেন তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন।

রাতেই আরিফের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল অভিযানে নামে। প্রথমে ভুক্তভোগী শাহনাজ কর্তৃক জনির উল্লিখিত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। সেটি বন্ধ পাওয়া গেলে কললিস্টের অন্য মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে লোকেশন জানার চেষ্টা করা হয়। প্রাথমিকভাবে জনির সর্বশেষ লোকেশন দেখায় নারায়ণগঞ্জ।

এর পর সর্বশেষ লোকেশন চিহ্নিত করে রাত ৩টার দিকে জনিকে নারায়ণগঞ্জের রঘুনাথপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় শাহনাজের স্কুটিটি।

একজন নারী হয়েও রাইড শেয়ারিং অ্যাপে ভাড়ায় স্কুটি চালাতেন শাহনাজ। স্কুটি চালিয়ে যা আয় হতো তা দিয়েই চলত তার সংসার। তার সেই অবলম্বনটি মঙ্গলবার চুরি হয়ে যায়।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি ভাইরাল হয়। অনেকেই তার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। পাশাপাশি বাইকটি উদ্ধারে তৎপর হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এ বিষয়ে শাহনাজ আক্তার বলেন, ঋণ করে স্কুটিটি কিনেছিলাম। এ স্কুটিটি দিয়েই চলত আমার সংসার। গতকাল সেই সম্বলটিও চুরি হওয়ার পর বেশ ভেঙে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম জীবনযুদ্ধে হয়তো হেরে যেতে হবে।

অবশেষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাইকটি উদ্ধার হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি তিনি স্কুটিটি চুরির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।

শাহনাজ আক্তারের স্কুটিটি নীল রঙের। যার নম্বর ঢাকা মেট্রো-হ ৫৫-২৯৪৭। স্কুটিটি মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের বিপরীত দিকে রাজধানী স্কুলের সামনে থেকে চুরি যায়। পরে তিনি রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করেন।

সংগ্রামী নারী শাহনাজ আক্তার সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। রাজধানীর মিরপুরেই জন্ম তার। বাবা নেই, মা আর বোনেরা আছেন। স্বামী থাকলেও তিনি আলাদা থাকেন। তার সঙ্গে তার দুই মেয়েও থাকে। বড় মেয়ে নবম ও ছোট মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here