গরু জব্দ করাকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে বিজিবির সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ও আহতের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বেতবনা সীমান্তে বিজিবি ও গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন গ্রামবাসী নিহত ও অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে। এ ঘটনায় আমি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কোন মানুষকেই বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা আইন সম্মত নয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অস্ত্র থাকলেই তা ত্বরিৎ প্রয়োগ করা সুশাসনের লক্ষণ হতে পারে না। বরং তা বেপরোয়া ও বেআইনী কর্মকান্ডেরই অংশ। মির্জা আলমগীর বলেন, সুদীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় বিএসএফ সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা করে আসছে। এর সঙ্গে দেশের বিজিবি-ও যদি যুক্ত হয় তাহলে সীমান্তবর্তী মানুষজনের জীবনের আর কোন নিরাপত্তা রইল না।
এখন জনগণ প্রশ্ন করছে, বিজিবি কার স্বার্থ রক্ষা করছে? বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলাদেশে জঙ্গলের রাজত্ব স্থায়ীভাবে আসন লাভ করবে। গণসম্মতিহীন সরকার প্রতিষ্ঠিত থাকলেই কেবলমাত্র প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেআইনী কর্মকান্ড চালাতে উৎসাহী হয়। কারণ তাদের কোন জবাবদিহিতা করতে হয় না। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মধ্যরাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে মহাভোট ডাকাতির মহা আয়োজন অনুষ্ঠিত করার জন্যই দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনানুগ কাজে অনীহা প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। গুম-খুন-অপহরণ-নারী শিশু নির্যাতন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে গিয়েই সামাজিক অপরাধীরা দেশব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সামাজিক অনাচার এখন ভয়াবহ মাত্রা লাভ করেছে। আতঙ্ক ও ভয় দেশের মানুষকে গ্রাস করে ফেলেছে। দেশ এখন নৈরাজ্যের অন্ধকারে ডুবে গেছে। রাজধানী থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত সীমান্তবর্তী অঞ্চলেও রক্ত ঝরছে। ক্ষমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে বলেই রক্তঝরার পরিমান দিনে দিনে বাড়ছে।
মির্জা আলমগীর বলেন, এই অরাজক পরিস্থিতি চলতে পারে না। অত্যাচারিত জনগণের অন্ত:রুদ্ধ ক্ষোভ যেকোনো মূহুর্তেই বিস্ফোরিত হবে। দেশের মানুষ সকল ভয়ভীতি অতিক্রম করে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবেই। আমি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বেতনা সীমান্তে বিজিবি ও গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন গ্রামবাসীর নিহত ও অসংখ্য মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির জোর দাবি করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here