ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া নিলে ব্যবস্থা : আছাদুজ্জামান মিয়া

0
108

ঈদযাত্রায় যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিলে সেই যানবাহনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

রাজধানীর গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বুধবার আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।

ঈদের সময় মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন নামতে পারবে না বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ-বাস মালিকদের অংশগ্রহণে একটি সমন্বিত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। বাস ছাড়ার আগেই ওই কমিটির সদস্যরা চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করবেন, যাতে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি রাস্তায় নামতে না পারে। আমরা সকলের প্রচেষ্টায় সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমিয়ে এনেছি, এবার ঈদ যাত্রায় দুর্ঘটনা আমরা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চাই।’

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘ঈদের সময় বাস টার্মিনালে যাত্রীদের বাড়তি চাপ থাকে। বাসগুলো নির্বিঘ্নে ঢাকা ছাড়তে এবং ঢাকায় প্রবেশ করতে টার্মিনালের মুখগুলো ফাঁকা রাখতে হবে। যাত্রী ওঠা-নামা হবে টার্মিনালের ভেতরে। কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করা যাবে না। আমরা টার্মিনালের সীমানাচিহ্ন হলুদ রেখা নির্ধারণ করে দিয়েছি। টার্মিনাল থেকে বাসে যাত্রী উঠিয়ে হলুদ রেখা অতিক্রম করলেই সেই গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না।’

অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাস-মালিক সমিতি ও টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ বাস টার্মিনাল এলাকায় খাবার বিক্রি করে এমন হকারদের তালিকা তৈরি করুন। এতে হকার বেশে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা এসে, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সবকিছু লুট করে নিবে তা হতে পারবে না।

টার্মিনালে যাত্রীদের ব্যাগ ধরে টানাটানি নিষেধ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এটা এক ধরনের জন হয়রানি। যাত্রী কোনো বাসে যাবেন সে সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই নেবেন। এ ধরনের হয়রানিসহ যে কোনো হয়রানি রোধে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থাকতে হবে।

কোনো চালক গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বললে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার। বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাদকাসক্ত কাউকে ড্রাইভিং সিটে বসাবেন না। মাদকাসক্ত বলে কাউকে সন্দেহ হলে ডোপ টেস্ট করান। আমরা সহযোগিতা করব। মাদকাসক্ত কাউকে গাড়িতে চাকরি দেবেন না।’

রমজান ও ঈদ উপলক্ষে নগরজুড়ে সমন্বিত-সুদৃঢ় নিরাপত্তা বলয়ের কথা উল্লেখ করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, নানাবিধ কলাকৌশলের মধ্য দিয়ে আমরা নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করে যাচ্ছি। শপিংমলগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে, প্রবেশপথে আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। নগরী জুড়ে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। মোবাইল পেট্রল ও চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে। ফলে রমজানে নগরীতে উল্লেখযোগ্য ছিনতাই, ডাকাতি, অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা নেই। ঈদের লম্বা ছুটিতে বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা নিজেদের প্রাথমিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে যাবেন। বাকিটা আমরা সমন্বয় করে নিরাপত্তা দেব।

মতবিনিময় সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, যুগ্ম কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বাবু রমেশ চন্দ্র ঘোষ, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান, ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি আব্বাস উদ্দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here