ভাইগো আমার হাতটা খুঁইজা দেন, ডাক্তার জোড়া দেবে

0
71

বাংলা খবর ডেস্ক: হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ। আর সাথে সাথেই লুটিয়ে পড়েন জান্নাত আক্তার। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকেই ভেবেছিলো জান্নাত আর বেঁচে নেই। এই পুরো ঘটনাই ঘটে কয়েক মিনিটের মধ্যে। হঠাৎই এমন ঘটনায় মুহূর্তেই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলো রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকা। সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১২ শিশুসহ ১৮ জন।

যখনকার ঘটনা তখন সবে এসে বেলুনওয়ালার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন জান্নাত। ভাবছিলেন ঘরে থাকা তার পাঁচ বছরের শিশুর জন্য বেলুন কিনবেন কি না। আর এমন সময়ই ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনা। ভয়ঙ্কর এ বিস্ফোরণে জান্নাতের ডান হাত উড়ে গেছে।

স্থানীয়রা জান্নাতকে উদ্ধার করে ঢামেকে ভর্তি করেছেন। জান্নাত স্বামী অটোরিকশাচালক নজরুল ইসলাম ও শিশুসন্তান সুমাইয়াকে (৫) নিয়ে রূপনগরের ১২ নম্বর রোডের একটি বস্তিতে থাকেন। তার বাড়ি ভোলার ইলিশায়।

হাসপাতালে কথা হয় জান্নাতের সাথে। তিনি জানান, সারাদিন মানুষের বাসায় কাজ করে রূপনগর ১১ নম্বর রোডের একটি বাজারে যান। সেখান থেকে একটি মুরগি ও পেঁপে কেনেন। বাজার নিয়ে পায়ে হেঁটে বাসায় ফেরার সময় ওই এলাকায় ভ্যানে করে বেলুন বিক্রি করতে দেখেন। সামনে গিয়ে দেখেন বিক্রেতা গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে ফুলিয়ে বেলুন বিক্রি করছেন। সেখানে গিয়ে মেয়ের জন্য বেলুন কিনবেন কি-না চিন্তা করতে থাকেন। এমন সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ।

জান্নাত বলেন, তারপরে আর কিছুই মনে নেই। হাসপাতালে এসে দেখি আমার হাত নেই।

কান্নায় ভেঙে পড়ে জান্নাত বিলাপ করতে থাকেন, ‘ভাই গো, আমার হাতটা কই? আমার হাতটা খুঁইজা দেন। হাতটা আইনা ডাক্তারদের দেন। তারা আবার জোড়া লাগাইয়া দেবে।’

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. আলাউদ্দিন জান্নাতের ব্যাপারে বলেন, জান্নাত হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন। তার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া হাতের অংশটি আমরা পাইনি।

রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পরপরই হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় জান্নাত রাস্তায় পড়েছিলেন। প্রথমে ধারণা করেছিলাম তিনি বেঁচে নেই। তবে তিনি আহতাবস্থায় এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here