আজ হিলি মুক্ত দিবস

0
67

বাংলা খবর ডেস্ক: আজ ১১ ডিসেম্বর হিলি মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হিলি পাক হানাদার মুক্ত হয়। আজকের দিনে দিনাজপুরের হিলির মুহাড়াপাড়া এলাকায় বড় ধরণের সম্মুখযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল বলে দাবি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের। যুদ্ধ চলাকালীন এখানে প্রায় সাত হাজার পাক সেনা নিহত হয়। শহীদ হন প্রায় ১৩শ’ মুক্তিযোদ্ধা এবং মিত্র বাহিনীর ৩৪৫ জন সদস্য। আহত হন অনেকে। প্রচন্ড যুদ্ধের পর ১১ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের ৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় দিনাজপুরের হিলি শত্রুমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধে হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদাড় গ্রামের মোস্তফা, একরাম উদ্দিন, বানিয়াল গ্রামের মুজিব উদ্দিন শেখ, ইসমাইলপুর গ্রামের মনিরুদ্দিন, মমতাজ উদ্দিন, বৈগ্রামের ইয়াদ আলী ও চেংগ্রামের ওয়াসিম উদ্দিন শহীদ হন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন জানান, ১৯৭১ সালে দেশে যখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। বিশেষ করে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে স্পষ্ট হয়ে উঠে, যে কোনও মুহুর্তে পাকহানাদারদের সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ বাধতে পারে। এমতাবস্থায় সারাদেশের সঙ্গে হাকিমপুর তথা হিলি এলাকার নেতাদের আহ্বানে সমাজসেবক খলিলুর রহমান ও ডা. আবুল কাশেমকে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্কুল কলেজের উৎসাহী যুবক, আনসার ও মুজাহিদদের সমন্বয়ে বাংলা হিলি বালিকা বিদ্যালয়ে একটি সেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করা হয়।

২৫ মার্চ পাকহানাদার বাহিনীর বর্বর হামলায় ঢাকা অক্রমণের পর পাক বাহিনীরা যাতে হাকিমপুরে প্রবেশ করতে না পারে সেই লক্ষ্যে হিলির সেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যরা আগে থেকেই সড়কে গাছ কেটে ও রাস্তা খনন করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে থানা ও ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) ক্যাম্প থেকে সেচ্ছাসেবক বাহিনীর কাছে ৩০৩টি রাইফেল হস্তান্তর করা হয়।

এ সময় তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর নিজাম উদ্দিন ১৭টি গাড়িবহরসহ বেশ কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফুলবাড়িতে এসে অবস্থান নেন এবং ওই সেচ্ছাসেবক দলকে হিলি ইপিআর ক্যাম্পের সুবেদার শুকুর আলীর নেতৃত্বে কয়েকজন ইপিআরকে বিহারী অধ্যুষিত পার্বতীপুরের হাবড়ায় খান সেনাদের প্রতিরোধ করার জন্য পাঠায়। এসময় সেখানে সেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে পাকহানাদারদের সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। প্রচন্ড শেলিং ও বিভিন্ন ধরনের গোলার আঘাতে সেচ্ছাসেবক দলের ৯ জন যোদ্ধা সেসময় শহীদ হন। নয় মাস যুদ্ধ শেষে ১১ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর সহযোগিতা ও মুক্তিবাহিনীর বীরত্বে হিলি শত্রুমুক্ত হয়।

আজ হিলি মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধা সংগঠনগুলিরে আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধারা সকাল থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here