শেখ রাসেল পানি শোধনাগার প্রকল্পের উদ্বোধন রোববার

0
122

বাংলা খবর ডেস্ক: ‘শেখ রাসেল পানি শোধনাগার প্রকল্প’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে তিনি এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

দীর্ঘ দেড় বছর ধরে চট্টগ্রাম নগরীর একাংশে দৈনিক ৯ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে আসছে চট্টগ্রাম ওয়াসার এই প্রকল্পটি। নগরীর কয়েক লাখ মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করছে। একইভাবে নেওয়া আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে ওয়াসা। ২০২২ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে ৫০ কোটি লিটার পানি সরবরাহের টার্গেট নিয়েছে ওয়াসা।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাটে সাংবাদিকদের নিয়ে পানি শোধনাগার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে যান ওয়াসার কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম জানান, বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ২০১৫ সালে হালদা নদীর পাড়ে পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে পানি সরবরাহ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে পাইপলাইন কমিশনিং করা হয়েছে। বর্তমানে নগরীর বাদুরতলা, বহদ্দারহাট, চকবাজার, বৃহত্তর বাকলিয়া, দেওয়ানবাজার, আন্দরকিল্লা, লালদিঘীর পাড়, কোতোয়ালী থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত এলাকায় এই প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

পানি উত্তোলন ও পরিশোধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়াসার এই প্রকৌশলী জানান, প্রতিদিন হালদা নদী থেকে ১০ কোটি লিটার পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় পানির মানমাত্রা সঠিক রাখার জন্য নমুনা পরীক্ষা করা হয় ল্যাবে। নমুনা সঠিক থাকলে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে অধঃক্ষেপ তৈরি করা হয় যাতে ময়লাগুলো দানা বেঁধে পানির তলানিতে জমে থাকে। উপরের স্বচ্ছ পানি আলাদা করে সেখানে মেশানো হয় ক্লোরিন। এর ফলে জীবাণু থাকলে সেগুলো ধ্বংস করা হয়। বিশুদ্ধকরণের পর ৯ কোটি লিটার পানি থাকে, সেগুলো পাইপলাইনে দেওয়া হয়। সেই পানি সরাসরি যাচ্ছে গ্রাহকদের কাছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল্লাহ বলেন, ‘শেখ রাসেল পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে সরবরাহ শুরু হলেও এতদিন আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করতে পারিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন সদয় সম্মতি দিয়েছেন উদ্বোধনের জন্য। রোববার এ প্রকল্পের উদ্বোধন হবে।’

চট্টগ্রাম ওয়াসার ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান, মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের জন্য ২০ কোটি লিটার পানি সরবরাহের একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। হালদা নদী থেকে পানি উত্তোলন করে এটি করা হচ্ছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে এলএনজি টার্মিনাল ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাওয়া গেছে। কর্ণফুলী নদী থেকে পানি নিয়ে সেই পানি সরবরাহ প্রকল্প করার চিন্তাভাবনা চলছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সদস্য বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী বলেন, ‘চট্টগ্রামে দিনে পানির চাহিদা আছে ৪২ কোটি লিটার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে চট্টগ্রামে পানি সরবরাহ করা হতো দিনে ১২ কোটি লিটার। ২০২০ সালে এসে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে ৩৬ কোটি লিটার অর্থাৎ পানি সরবরাহ বেড়েছে তিনগুণ। রাঙ্গুনিয়ায় শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ২০২২ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসা ৫০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে পারবে। এছাড়া বোয়ালখালীর ভাণ্ডালজুড়িতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের জন্য আরও একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। পানি সরবরাহে এই যুগান্তকারী উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার ফলে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here