পাট রপ্তানিতে সোনালি দিন: ৮ মাসে আয় ৭০ কোটি ডলার

0
83

বাংলা খবর ডেস্ক: দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক, চামড়াসহ অন্যান্য খাত নিয়ে যখন দুশ্চিন্তা বাড়ছে, তখন আশার আলো দেখাচ্ছে পাট ও পাটজাত পণ্য। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি ডলার (৬৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার)। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরের পাট খাত থেকে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির যে ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে তা বাকি চার মাস (মার্চ-জুন) অব্যাহত থাকলে এবার পাট খাতের রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ খাত থেকে ৮১ কোটি ৬৩ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি করে ১০২ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের পণ্য। দেশের ইতিহাসে ওই একবারই এ খাতের রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৯৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। তার আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এসেছিল ৯২ কোটি ডলার।

ইপিবির তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পাটের সুতা ও বস্তা রপ্তানি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। পরের অবস্থানে আছে কাঁচা পাট। আলোচ্য সময়ে ১১ কোটি ৩১ লাখ ডলারের কাঁচা পাট রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ৩৪ কোটি ১২ লাখ ডলারের পাট সুতা রপ্তানি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ২৬ শতাংশ। আর বিভিন্ন ধরনের পাটের ব্যাগ রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৭ শতাংশ বেশি।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা।

দেশের একাধিক পাটকলের মালিকরা জানান, ফলন কম হওয়ায় বর্তমানে ভালো মানের পাটের মণ আড়াই হাজার টাকায় উঠেছে। কিছুটা নিম্নমানের পাটের মণ ২ হাজার ২০০ টাকা। তারপরও চাহিদা অনুযায়ী পাট মিলছে না। আড়তদারেরা বাড়তি দামের আশায় পাট মজুত করে রাখছেন। সামনের মাসগুলোতে কাঁচা পাটের দাম আরও বাড়বে।

কাঁচাপাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পাট মন্ত্রণালয়। বহির্বিশ্বের বাজারে বৈচিত্র্যপূর্ণ পাটপণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ফলে এ খাতে রফতানিও বাড়ছে। পরিবেশ রক্ষায় পাটের তৈরি বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করছে বাংলাদেশ। দেশে এখন ২৮২টি বহুমুখী পণ্য উৎপাদন হচ্ছে।

বর্তমানে দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতে মোট ২২টি পাটকল চালু রয়েছে এবং বেসরকারি খাতে প্রায় ২০০ পাটকল আছে। তুরস্ক, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বেনিন, ব্রাজিল, বুলগেরিয়া, কানাডা, চিলি, চীন, কংগো, কোস্টারিকা, মিসর, ইতালি, ইন্দোনেশিয়া, ইথোপিয়া, গাম্বিয়া, জার্মানি, গোয়েতেমালা, হাইতি, ভারত, আয়ারল্যান্ড, ইরান, জাপান, জর্ডান, কোরিয়া, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, মেক্সিকোসহ বিশ্বের ৫০টি দেশে পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here