ঢাকা শহরের লকডাউন চেয়ে হাইকোর্টে রিট

0
556

বাংলা খবর ডেস্ক:
ঢাকা শহরকে কড়াকড়িভাবে দ্রুত লকডাউন ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।

লকডাউন চলাকালে ঢাকার দুই মেয়র যাতে কাউন্সিলদের মাধ্যমে ঢাকার প্রত্যেক এলাকায় গরিবদের মাঝে খাদ্য এবং ওষুধ সরবরাহ করে তার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিট আবেদনে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও মুমূর্ষু রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ‘হাই ফ্রো নেজাল অক্সিজেন ক্যানুলা’ সংগ্রহের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে কভিড-১৯ সংক্রমিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন সরবরাহের সার্বিক সুবিধাসহ আলাদা হাসপাতাল ব্যবস্থা নিশ্চিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল ইসলামের পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুন) এ রিট আবেদন দাখিল করেন। এতে ঢাকার দুই মেয়র, মন্ত্রিপরিষদ, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়, স্বাস্থ্য ও অর্থ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) ও অতি. সচিব (প্রশাসন), র‍্যাব মহাপরিচালক ও ঢাকার পুলিশ কমিশনারকে বিবাদী করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে এরইমধ্যে দেশে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। ঢাকা শহরে হাজার হাজার রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে সরকার গত ১৮ এপ্রিল অধ্যাপক মো. শহিদুল্লাহকে সভাপতি করে ১৭ সদস্যের জাতীয় টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি মৃত্যু কমানোর জন্য গত ৮ জুন এক সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে কিছু সুপারিশ করে।

ওই সুপারিশে বলা হয়, ঢাকা শহরকে কড়াকড়িভাবে সম্পূর্ণ লকডাউন করতে হবে। আর তা না হলে মৃত্যু মেনে নিতে হবে। এলাকাভিত্তিক লকডাউন কোনো সুফল বয়ে আনবে না। হলুদ জোন, লাল জোন মিলেমিশে আছে। ঢাকাকে পুরোপুরি লকডাউন করতেই হবে’- এ ধরনের স্পষ্ট এভিডেন্স বেজড বা ডাটা বিশ্লেষণ করে পরামর্শ দিয়েছে ইপিডেমোলজিস্টদের সমন্বয় গড়া সাব-কমিটি। বিস্তারিত আলোচনার পর জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির আলোচকরা এপিডেমোলজিস্টদের সঙ্গে একমত হন এবং সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করা হয়।

বারবার পরামর্শ ও তাগিদ দেওয়ার পর এখনও জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনীয় একটি চিকিৎসাকৌশল, ‘হাই ফ্লো নেজাল অক্সিজেন ক্যানোলা’র ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়নি। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারভিত্তিতে অনতিবিলম্বে এর জোগান নিশ্চিত করার জোরালো তাগিদ পাস করা হয়। এ ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের জটিলতা দূর করে, প্রয়োজনে আলাদা রেজুলেশন করে মানুষের জীবন রক্ষায় ‘হাই ফ্লো নেজাল অক্সিজেন ক্যানোলা’র পর্যাপ্ত প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে বলে মতামত দেন পরামর্শকরা।

চিকিৎসকরা ব্যাপক হারে মারা যাচ্ছেন, সংক্রমিত হচ্ছেন। তাঁদের চিকিৎসা-সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও সেবা ভেঙে পড়বে। ইতিমধ্যে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। সুতরাং কভিড-১৯ সংক্রমিত চিকিৎসকদের (স্বাস্থ্যকর্মীসহ) যথাযথ চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন সরবরাহের সার্বিক সুবিধাসহ আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা কালক্ষেপণ না করে নিশ্চিত করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের বরাদ্দের পক্ষে সর্বসম্মত প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এ হাসপাতালের পরিচালনায় ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের কোনো ঘাটতি থাকলে তাও দ্রুত পূরণের পক্ষে মতামত গ্রহণ করা হয়। টেকনিক্যাল কমিটির উক্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন করে ঢাকা শহর লকডাউন ঘোষণা করা বা স্বাস্থ্যকর্মীদের উন্নত চিকিৎসা বা মুমূর্ষ রোগীদের জন্য হাই ফ্রো নেজাল অক্সিজেন ক্যানোলা পর্যাপ্ত সংগ্রহ করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলেও তা করা হচ্ছে না, যার কারণে শত শত মানুষের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে।

মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, রিট আবেদনে বিবাদীদের ওপর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে ঢাকাকে দ্রুত লকডাউন ঘোষণার জন্য। বলা হয়েছে লকডাউনের সময় কমিশনারদের (কাউন্সিলর) মাধ্যমে প্রত্যেক এলাকায় গরিবদের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও মেডিসিন সরবরাহ করবেন সিটি করপোরেশনের মেয়ররা। এতে লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে সরকার।

এ ছাড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত হাই ফ্রো নেজাল অক্সিজেন ক্যানোলা সংগ্রহের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here