দেশে প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে নারীরা। পাশাপাশি বিভিন্ন জনসমাগমস্থলেও তাদের শিকার হতে হয় যৌন হয়রানির। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, ৫০ থেকে ৯৪ শতাংশ নারী মুখোমুখি হচ্ছে এমন যৌন হয়রানির।
নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, সচরাচর ভিড় হয় এমন স্থানে যেতে সংকোচ বোধ করেন নারীরা। আর তাদের স্বভাবগত ভয়-দ্বিধা ও বিচারহীনতাই এর জন্য দায়ী।
পুলিশ বলছে, আইনগত ব্যবস্থার পাশাপাশি জনসাধারণের সচেতনতা রুখতে পারে নারীর প্রতি হয়রানিমূলক এসব আচরণ।
একজন নারী বলেন, আমার শরীর স্পর্শ করে এক ছেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। আশপাশের মানুষ আমার কাছে জিজ্ঞাসা করে, ওই ছেলে কি মোবাইল নিয়ে পালিয়েছে? আমি বলি, না, আমার গায়ে হাত দিয়েছে। তখন সঙ্গে সঙ্গে চিত্রটা পাল্টে যায়। আসলে প্রতিবাদ না করতে করতে অবস্থা এমন হয়েছে।
ভিড় যেখানে নৈমিত্তিক, হয়রানির ঘটনা সেখানে অবধারিত। ভিড় মানেই এক অজানা আতঙ্ক নারীদের কাছে। হোক বাসে ওঠার ভিড়, মার্কেটের ভিড় বা উৎসবের ভিড়।
এক তরুণী বলেন, মধ্যবয়সীরা অনেক সময় ইচ্ছা করে শরীর স্পর্শ করে। অনেক দোকানদার আছে যারা নানা ধরণের হয়রানিমূলক কথাবার্তা বলে। আর গণপরিবহনে সহযাত্রী, চালক-সহযোগীসহ পথচারীদের দ্বারা আক্রান্ত হন নারীরা। তবে আশেপাশে যদি জনস্রোতও থাকে তাহলেও পাশে এসে দাঁড়ায় না কেউই।
নারী অধিকার কর্মীরা মনে করেন, নারীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার মানসিকতাই প্রধান কারণ। ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদই রোধ করতে পারে নারী নিপীড়ন।
নারী অধিকারকর্মী সামিনা লুৎফা বলেন, মেয়েরা পণ্য এবং সম্পত্তি বেশিরভাগ মানুষ এটা মনে করে। পাশাপাশি তারা মনে করে মেয়েদেরকে যেকোনভাবে ব্যবহারের সুযোগ পুরুষের আছে। তবে একজন নারী যদি নিরাপদ না হয় তখন কিন্তু কেউই নিরাপদ না।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান বলেন, নারী ছাড়া কেউই কিন্তু পৃথিবীতে আসে না। আমাদের কাছে যদি অভিযোগ করা হয়। তাহলে কিন্তু আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারি।
বেসরকারি দুটি সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শতকরা ৯৪ ভাগ নারী গণপরিবহনে ও ৫০ ভাগ নারী কেনাকাটা করতে গিয়ে নিপীড়নের শিকার হন। এর মাঝে ৮১ শতাংশ নারী চুপ করে সহ্য করেন আর স্থান পরিবর্তন করেন ৭৯ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here