এফবিআই’র মোস্ট ওয়ান্টেড ডাক্তার জাহিদুল !

0
537

বাংলা খবর ডেস্ক : ঢাকার একটি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে জাহিদুল ইসলাম নামে একজন চিকিৎসকের আত্মগোপনের তথ্য আদান-প্রদান করেছে এফবিআই। চলতি সপ্তাহে মেইল বার্তায় এ তথ্য বিনিময় হয়। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় ফিলাডেলফিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক তরুণীকে ডাক্তার জাহিদুল ইসলাম ধর্ষণ করেছিলেন। তখন থেকেই পালিয়ে আছেন তিনি। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে রেড ওয়ারেন্ট জারি করে এফবিআই। ডাক্তার জাহিদুলের নাম এখন এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায়। ধর্ষণের পর জাহিদুল শাস্তি এড়াতে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেছেন বলে এফবিআইয়ের তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।

বর্তমানে জাহিদুল ইসলাম খুলনায় প্র্যাকটিস করছেন। এর আগে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার একটি হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।

ঢাকার অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা দলের এক সদস্য খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, ডাক্তার জাহিদুল ইসলামের বাসা ধানমণ্ডি লেক সংলগ্ন। তার স্ত্রীর নামের অদ্যাক্ষর, ‘স’। তিনিও একজন চিকিৎসক। এদের ঢাল হিসেবে কাজ করেন একজন ঊর্ধ্বতন নারী কর্মকর্তা। ডাক্তার জাহিদুলের ব্যাপারে কেউ অনুসন্ধান করলে সেই নারী কর্মকর্তা প্রায় হস্তক্ষেপ করে থাকেন। এর আগে ২০১৫ সালে ঢাকার একটি গোয়েন্দা দল জাহিদুলকে ধরার জন্য সব ধরনের তৎপরতা চালান। তাকে ধরতে স্ত্রীর গতিবিধি লক্ষ করেন। কিন্তু জাহিদুল এতটাই ধুরন্দর যে তিনি দীর্ঘদিনের আত্মগোপনে চলে যান।

জানা যায়, ডাক্তারি পেশায় এখনো বহাল থাকলেও জাহিদুল নিজেকে আড়াল করতে ঘন ঘন তবলিগ-জামাতে সফর করেন। এ ছাড়া অভিযুক্ত চিকিৎসক বয়সের কারণ ছাড়াও নিজেকে আড়াল করতে চেহারায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছেন। বিশেষ করে এফবিআই রেড ওয়ারেন্টে যে ধরনের তথ্য আছে সেই তথ্য হেরফের করতেই তিনি কৌশলে রূপ বদল করে চলছেন।

এফবিআইয়ের (ফেডারেল বু্যুরো অব ইনভেসটিগেশন, যুক্তরাষ্ট্র) রেড ওয়ারেন্টের তথ্য অনুযায়ী পেশায় চিকিৎসক জাহিদুল ইসলামের জন্ম ১৯৫৫-এর ১ অক্টোবর। তার উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। চোখের রং ব্রাউন এবং গায়ের রং ফর্সা। এফবিআইর তথ্যে আরো বলা হয়েছে, ১৯৯৬ সালের ৩ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় ফিলাডেলফিয়া হাসপাতালে মার্কিন এক তরুণী চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। জাহিদুল ইসলাম ছিলেন তার দায়িত্বরত একজন চিকিৎসক। দায়িত্বে থাকাকালীন নিজ কক্ষে ডেকে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এরপর তরুণীকে উদ্ধার করে নেয়া হয় সার্জারি বিভাগে। এ ঘটনায় পূর্ব পেনসিলভানিয়ার একটি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১৯৯৭ সালে এ বিষয়ে রেড ওয়ারেন্ট জারি করে এফবিআই।

রেড ওয়ারেন্টে উল্লেখ করা হয়, ওই তরুণীকে ধর্ষণের পর ডাক্তার জাহিদুল ইসলাম যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় পালিয়ে আসতে কৌশল নেন। তার ওপর নজরদারি শুরু হওয়ায় তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডার মন্ট্রিয়াল হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। কিন্তু দেশে আসার পর গুরুতর অপরাধের কারণে জাহিদুল ইসলাম আত্মগোপন করেন।

এদিকে ঢাকার সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার প্রায় ২২ বছর ধরে জাহিদুল অনেকটা আন্ডারগ্রাউন্ডে জীবনযাপন করছেন। তাকে ধরার বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে এফবিআই নতুন করে যোগাযোগ করছে বলে জানা গেছে।

ডাক্তার জাহিদুল ইসলামের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে পারিবারিক ছবি পাওয়া গেছে। যেখানে নতুন রূপে দেখা যাচ্ছে ডাক্তার জাহিদুলকে। এফবিআই তাদের যে তথ্য দিয়েছে সে তথ্যের সঙ্গে ছবির কিছুটা অমিল তৈরি হয়েছে। তবে সূত্র বলেছে, ডাক্তার জাহিদুলের এখন বয়স হয়েছে। তার স্ত্রীর বয়সও ৫০-এর ওপরে। এ কারণে এফবিআইর দেয়া সাদাকালো ছবির সঙ্গে তারতম্য দেখা দেয়। ছবিটি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ফার্মগেট ও খুলনার দুই চিকিৎসকেরও সহায়তা নেয়া হয়। সূত্রটি আরো জানায়, ২০১৫ সালের দিকে ডাক্তার জাহিদুলকে গ্রেফতারে একটি টিম সক্রিয় হয়েছিল। কিন্তু তথ্যগত সমস্যার কারণে তাকে ধরা সম্ভব হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here