নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট রেভারেন্ড জন আই. জেনকিন্স এবং কেলগ’স ফোর্ড প্রোগ্রাম ইন হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এন্ড সলিডারিটি এর পরিচালক রেভারেন্ড রবার্ট ডাউড একসঙ্গে ড. ইউনূসের হাতে ‘নটরডেম অ্যাওয়ার্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এন্ড সলিডারিটি’ পুরস্কার তুলে দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যে অবস্থিত প্রখ্যাত নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের নটরডেম ফোরামের বসন্তকালীন সেমিস্টারে মূল ভাষণ দিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্ববিদ্যালয়টির ডানকান স্টুডেন্ট সেন্টারের ডাহ্নকে বলরুমে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সমবেত প্রায় ৬৫০ জন শ্রোতার কাছে ড. ইউনূস সামাজিক ব্যবসায়ে তাঁর আত্মনিয়োগের কাহিনী তুলে ধরেন।

কেওগ স্কুল অব গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স-এর নটরডেম ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টের পরিচালক রে অফেনহাইজার এর সাথে আলাপচারিতায় প্রফেসর ইউনূস বলেন, তিনি শুরুতে তাঁর নিজের পকেটের টাকা থেকে ঋণ দেয়া আরম্ভ করেন এবং পরবর্তীতে দরিদ্র মানুষদেরকে বিশেষ করে দরিদ্র নারীদেরকে ছোট ছোট ঋণ দেবার জন্য একটি ব্যাংক গড়ে তোলেন। বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রায় ২ হাজার ৬শ শাখা রয়েছে যাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল গ্রামে ৯০ লক্ষ দরিদ্র মানুষকে – যাদের ৯৭ শতাংশই নারী – নিয়মিত ঋণ সুবিধা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই এখন গ্রামীণ মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে, এবং গ্রামীণ আমেরিকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি নগরীতে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে এক লক্ষেরও বেশী দরিদ্র নারীকে সেবা প্রদান করছে।

এরআগে কেলোগ ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থেকে ‘নটরডেম অ্যাওয়ার্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এন্ড সলিডারিটি’ গ্রহণ করেন ড. ইউনূস। গবেষণা, প্রায়োগিক গবেষণা ও চর্চা, জনসেবা এবং লোকহিতৈষী কাজের মাধ্যমে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে। নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট রেভারেন্ড জন আই. জেনকিন্স এবং কেলগ’স ফোর্ড প্রোগ্রাম ইন হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এন্ড সলিডারিটি এর পরিচালক রেভারেন্ড রবার্ট ডাউড উভয়ে ড. ইউনূসের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

কেওগ স্কুল অব গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স-এর নটরডেম ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টের পরিচালক রে অফেনহাইজারের সাথে আলোচনারত নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ফাদার জেনকিন্স বলেন, ‘প্রফেসর ইউনূস আমাদেরকে ব্যবসার একটি নতুন উপায় শিখিয়েছেন।’ ফাদার ডাউড বলেন, ‘প্রফেসর ইউনূসের কাজ এটা প্রমাণ করে যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মানুষের ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলি দেবার প্রয়োজন নেই।’

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর নটরডেম ফোরাম বিভিন্ন জটিল ইস্যুতে নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে যার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের ভূমিকা, অভিবাসন, টেকসই উন্নয়ন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, বৈশ্বিক বাজার, শিক্ষা, নারী নেতৃত্ব ইত্যাদি। নটরডেম ফোরামের এ বছরের শ্লোগান ছিল ‘গোয়িং গ্লোবাল’ যা বিশ্বায়নের বিভিন্ন সম্ভাবনা ও সমস্যাগুলো তুলে ধরে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here