কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়ে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ করেছে দৈনিক ইত্তেফাক। এমন অভিযোগ করে পত্রিকাটিকে আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারীদের প্লাটর্ফম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলেও আন্দোলনকারীরা ইত্তেফাক পত্রিকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ছাত্রদের এই সংগঠনটি বলছে, ১৬ এপ্রিল সোমবার বিকেল ৫টার মধ্যে এ প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় ১৭ এপ্রিল, মঙ্গলবার থেকে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইত্তেফাক পত্রিকাকে বর্জন করা হবে।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সোমবার দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পৃষ্ঠায় ‘কোটা আন্দোলনের সেই চার নেতার একজন শিবিরের সক্রিয় কর্মী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। ওই সংবাদে বলা হয়, ২০১২ সালে সূর্যসেন হলের ৫০৫ নম্বর কক্ষে থাকতেন রাশেদ খান। শিবির করার কারণে তিনি হল ছেড়ে চলে যান।

সংবাদটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করেন রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘আমি ২০১২-১৩ সেশনের ছাত্র। ২০১৩ সালের প্রথম দিকে আমাদের ক্লাস শুরু হয়। তাহলে আমি কীভাবে ২০১২ সালে হলে থাকি। আমি ২০১৩ সালের সূর্যসেন হলের গণরুমে থাকতাম। এমনকি আমি এখনো সূর্যসেন হলে থাকি।’

কোটা আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম নুর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘দৈনিক ইত্তেফাকে আমাদের নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা সত্য নয়। বিকাল ৫ টার মধ্যে যদি প্রকাশিত সংবাদ প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে সারা বাংলার ছাত্রসমাজ ইত্তেফাক পত্রিকা প্রত্যাহার করবে।’

নুরুল ইসলাম বলেন, ‘উপাচার্য স্যারের বাসায় যারা হামলা চালিয়েছে তাদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই। যারা হামলা চালিয়েছে তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর যদি কোনো আন্দোলনকারীকে হয়রানি করা হয় তাহলে বাংলার ছাত্রসমাজ আবার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’

পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দলে ছত্রছায়ায় এ আন্দোলন করছি না। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।’

আন্দোলনের সমন্বয়কারী হাসান আল মামুন বলেন, ‘আমার পরিবার আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত। ১৯৬৯ সালে তিনি ছাত্রলীগের একটি ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। আমিও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। আমি হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।’

আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, আন্দোলনকারীরা কোনো রাজনৈতিক দলের অনুসারী নয়। সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। কুচক্রী মহল তাদের সম্পর্কে বিভ্রান্তকর তথ্য প্রদান করছে।

৮ এপ্রিল কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সরাতে রাত আটটার দিকে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। টানা তিন দিন আন্দোলনের পর ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটাপদ্ধতি বাতিল করলে আন্দোলন স্থগিত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here