তারেক জিয়া কে দেশে ফেরানো ব্যাপারে ব্রিটিশ আইন যা বলে

0
188

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাধিক দুর্নীতি মামলার দণ্ড নিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের সম্মেলনে যোগদানের জন্য বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী এক সেমিনারে প্রশ্নোত্তরে এ কথা বলেন।
তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার হওয়ার পর জামিন পেয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান। সেখানে তিনি এখন স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন বলে জানা যায়।
তারেক রহমান দুটি মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। এর একটি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ও অপরটি মুদ্রাপাচার মামলা।
এসব দণ্ড পাওয়ার পর তারেক রহমানকে বিচারের জন্য দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ আইনি কাঠামোতে কতখানি সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ ব্যাপারে ব্রিটেনের আইনে কি বলা হয়েছে- বিবিসি বাংলার কাছে তা ব্যাখ্যা করেছেন ইংল্যান্ডে সুপ্রিমকোর্টের একজন আইনজীবী সৈয়দ ইকবাল।
তিনি বলেন, তারেক রহমান সফলভাবে ব্রিটেনে আশ্রয় এবং স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন। তিনি প্রমাণ করতে পেরেছেন যে বাংলাদেশে ফেরত গেলে তার ওপর জুলুম হবে রাজনৈতিক কারণে।
সৈয়দ ইকবাল জানান, তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, সেটি হল এক্সট্রাডিশন বা বিচারের জন্য প্রত্যর্পণ। এর প্রক্রিয়া হল যদি কোনো সরকার ব্রিটিশ হোম অফিস বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক্সট্রাডিশনের আবেদন পাঠায় তা হলে ব্রিটেনের ২০০৩ সালের এক্সট্রাডিশন আইন আলোকে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এক্ষেত্রে গ্রেফতারের পরোয়ানা দেয়া হবে আদালতের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, আদালত দেখবে যে এ ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা আছে কিনা। এর একটি হল- যে অপরাধের জন্য তাকে বাংলাদেশে নেয়া হবে তার জন্য তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে কিনা।
দ্বিতীয়টি হল যে সাজার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হবে- তার বাইরে অন্য কোনো সাজা যেন না হয়। তৃতীয়টি হল এক্সট্রাডিশন অর্থাৎ বিচারের জন্য প্রত্যর্পিত হওয়ার মতো কোনো অপরাধ তিনি করেছেন কিনা, উল্লেখ করেন সৈয়দ ইকবাল।
তারেক রহমান বা তার আইনজীবীরা যদি এটি চ্যালেঞ্জ করতে চান, তা হলে তারা আপিলের প্রক্রিয়ায় শরিক হতে পারেন, হাইকোর্টে বা সুপ্রিমকোর্টে যেতে পারবেন বলে জানান সৈয়দ ইকবাল।
তিনি বলেন, তা ছাড়া তারা যদি মনে করেন যে এতে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হচ্ছে বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে তাকে নেয়া হচ্ছে, তা হলে তারা জুডিশিয়াল রিভিউর মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। তারা বলতে পারবেন যে, কনভেনশনের আওতায় তাকে ব্রিটেনে আশ্রয় দেয়া হয়েছে- দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গেলে তার লঙ্ঘন হবে, তারা তা করতে পারবেন।
এই আইনজীবী জানান, ২০০৩ সালের এক্সট্রাডিশন আইন এবং ২০০২ সালের কমনওয়েলথ দেশগুলোর এক্সট্রাডিশনসংক্রান্ত আইনগুলোতে এ প্রক্রিয়াগুলো পরিষ্কারভাবে বলা আছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here