সব মামলায় জামিন না হওয়া নিশ্চিত করেই বলা যায়, অন্তত ঈদের আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। এর মানে, ৭৪ বছরে পা রাখা সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে চতুর্থবারের মতো ঈদ করতে হবে কারাগারেই।
গত ফ্রেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে নাজিম উদ্দীন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন তিনি।

ঈদ-উল-ফিতরের সময়ও কারাগারে ছিলেন তিনি। পরিবার-পরিজন ছাড়াই তাকে সেই ঈদ কাটাতে হয়।

এবার নিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেত্রীর কারাগারে ঈদ হবে ৪র্থ বার। এর আগে ১/১১ সরকারের সময় রোজা এবং কুরবানির ঈদ কাটে সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত সাব-জেলে।

ওই সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তারের পর সাব-জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৩৭২ দিন আটক থেকে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি মুক্তি পান।

খালেদা জিয়ার কারা জীবনের প্রথম রোজার ঈদ কাটাতে হয় ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর। একই বছরের সালের ২১ ডিসেম্বর কুরবানির ঈদও তাকে কাটাতে হয় ওই সাব জেলেই।

১/১১ এর সময় তিনি অভিযুক্ত হয়ে সাব-জেলে কাটালেও সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ঈদ করেন এবারই প্রথম। চলতি বছরের খালেদা জিয়ার রোজার ঈদ কেটেছে নাজিমউদ্দীন রোডের কারাগারে। এবারের ঈদেও তাকে সেই কারাগারেই থাকতে হবে।

এমন বিষয়কে অত্যন্ত বেদনাবিধুর এবং সীমাহীন কষ্টের উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমীগর চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের দলীয় নেত্রীকে কারাগারে রেখে ঈদ পালন করাটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। যদিও তিনি অত্যন্ত দৃঢ় মনোবলের। এ বিষয়ে অভ্যস্থ। কিন্তু আমাদের মানতে কষ্ট হয়।’ ‘

মিথ্যা মামলায়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকার খালেদা জিয়াকে বন্দী রেখেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার চায় বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে। কিন্তু তা সম্ভব হবে না। আমরা তাকে মুক্ত করবোই। তাকে মুক্ত করে তবেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

কারাগারে এটাই খালেদা জিয়ার প্রথম ঈদ নয় জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এর আগেও তিনি সংসদ ভবন এলাকার সাব-জেলে দুইবার ঈদ পালন করেছেন। এবার রোজার ঈদেও পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদ করেছেন।’

দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, ঈদের দিন পরিবারের সদস্যরা কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন।

এছাড়াও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা ঈদের নামাজের পর কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা রয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন তার সঙ্গে দেখা করার জন্য এরই মধ্যে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেন। ওই রায়ের পর থেকেই খালেদা জিয়া নাজিমুদ্দীন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।

পরে খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করলে তাকে অর্ন্তবর্তী জামিন দেন মঞ্জুর করেন আদালত। তবে আরো কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোয় তিনি মুক্তি পাননি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here