ইলিয়াস কাঞ্চন অসত্য বলছেন: বিমান মন্ত্রণালয়

0
100

নিজের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন সংবাদ মাধ্যমে একের পর এক অসত্য কথা বলছেন বলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করে মন্ত্রণালয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৫ মার্চ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের স্ক্যানারে পিস্তল ও গুলি ধরা না পড়ার ঘটনা নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বলছেন, ‘ব্যাগে থাকা লাইসেন্স করা পিস্তলটি বাসায় রেখে আসতে ভুলে যাই। এরই মধ্যে বিমানবন্দরের প্রবেশগেটে ব্যাগটি তল্লাশি করা হয়। নভোএয়ারের বোর্ডিং কাউন্টারে এসে ব্যাগে থাকা পিস্তলের কথা মনে পড়ে। স্ক্যানিং মেশিনে পিস্তল ধরা না পড়ায় আমি অবাক হই। এ ব্যাপারে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। তাৎক্ষণিক কর্তৃপক্ষ আমার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে’।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ, ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘প্রথম স্ক্যানার পার হওয়ার পর মনে পড়ায় আমিই তাদের কাছে গিয়েছি। কেন স্ক্যানারে এ বিষয়টি ধরা পড়েনি তা নিয়ে আমি তাদের কাছে অভিযোগ করেছি’।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান মন্ত্রণালয়ের দাবি, ঘটনার বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন নিজের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে সংবাদ মাধ্যমে একের পর এক অসত্য কথা বলছেন। প্রকৃতপক্ষে ওই দিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে যা ঘটেছে তা হলো– ইলিয়াস কাঞ্চনের ল্যাপটপের ব্যাগে থাকা পিস্তল ও গুলি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের অ্যান্টি-হাইজাকিং পয়েন্টে স্ক্যানিং করার সময় শনাক্ত হয়।

বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি তার ভুল স্বীকার করেন। তখন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা তাকে বিমানবন্দরের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিস্তলটি বহন করার জন্য অনুরোধ করলে তিনি ওই স্থান থেকে ফেরত যান। পরবর্তীতে তিনি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিমানে চট্টগ্রামে গমন করেন।

এর আগে বুধবার রাতে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ল্যাপটপ ব্যাগের ভেতরে অস্ত্রটা ছিল, যেটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রাথমিক নিরাপত্তা পরীক্ষার সময় প্রথমবার স্ক্যানারে অস্ত্রটি ধরা পড়েনি।

দ্বিতীয়বার পরবর্তী স্ক্যানারে নেয়ার আগে আমার ল্যাপটপ ব্যাগে থাকা পিস্তলটির কথা মনে হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই আমি বিষয়টি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে অবহিত করি।

তিনি জানান, এ সময় অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের প্রথম গেটের স্ক্যানার মেশিনের নজর এড়িয়ে ৯ এমএম পিস্তল আর ১০ রাউন্ড গুলি ব্যাগসহ বিনা বাধায় স্ক্যানিং মেশিন পার হন তিনি। এরপর নভোএয়ারের বুকিং কাউন্টারে গিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, তার সঙ্গে নিয়ে আসা পিস্তলও গুলিভর্তি ব্যাগ স্ক্যানারে ধরা পড়েনি।

বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে শাহজালাল বিমানবন্দরের মেম্বার সিকিউরিটি শাহ এমদাদুল হক, বিমানবন্দরের পরিচালকসহ (নিরাপত্তা) বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা উপস্থিত হন।

প্রথম স্ক্যানিংয়ে ব্যাগে থাকা পিস্তল ধরা না পড়ার বিষয়টির জন্য তাৎক্ষণিক শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলে জানান ইলিয়াস কাঞ্চন।

এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষও (বেবিচক) এ ঘটনায় তাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে গণমাধ্যমে।

বেবিচক মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ঘোষণা ছাড়া বিমানবন্দরে পিস্তল নিয়ে প্রবেশের অপরাধে ইলিয়াস কাঞ্চনকে গ্রেফতার করতে পারত সিভিল এভিয়েশন। কিন্তু তিনি দেশের একজন সম্মানী ব্যক্তি, তাই তাকে পিস্তল বহনের নিয়মগুলো ব্রিফ করে ছেড়ে দেয়া হয়।

বুধবার রাতে এ বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, এখন তো দেখছি উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ওরা তো আমার অস্ত্রটি তাদের স্ক্যানারে ধরতে পারেনি, আমিই স্বপ্রণোদিত হয়ে তাদের কাছে বিষয়টা জানিয়েছি। আমার যদি দোষ থাকতো, আমি যদি চেকিংয়ে ধরা পড়তাম তাহলে নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হলো কেন?

বিষয়টি দেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে ভুল বার্তা যাবে বলে প্রথমদিকে তিনি নিজে থেকে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করেননি বলে জানান একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় এ চিত্রনায়ক।

উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকালে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটে ‘খেলনা পিস্তল’ নিয়ে উঠে উড়োজাহাজটি ছিনতাইচেষ্টা করেন পলাশ আহমেদ নামে এক যুবক। পরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন তিনি।

সূত্র: যুগান্তর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here