বাংলা খবর ডেস্ক: ডেঙ্গু নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। জ্বর এলেই যে ডেঙ্গু এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্য দেশের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে আমাদের দেশে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা উল্লেখযোগ্য উন্নত হয়েছে। অনেকেই প্লাটিলেট কমে গেলেই ভয় পান। গতকাল ৯০ হাজার ছিল পরের দিন ৭৫ হাজারে নেমেছে। এটা নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। প্লাটিলেট ৫০ হাজারে নামলেও তিনি নিরাপদ।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এসময় বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক আহমেদুল কবির বলেন, ডেঙ্গুতে আতংকিত হওয়া যাবে না। বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যুর হার পর্যালোচনা করলেই জনগণের মধ্যে বিরাজমান আতংক নিরসন হবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুজ্বর ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে যাওয়ার আশংকা মাথায় রেখে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করছে। এজন্য পাঁচটি বিভাগীয় মেডিক্যাল কলেজসহ ৩৮ জেলার মেডিক্যাল কলেজে একই সঙ্গে আগামী ৫ আগস্ট বেলা ১১টায় ন্যাশনাল গাইডলাইন বিতরণসহ এ রোগের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ৩৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক একযোগে চিকিৎসা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন।
‘আপনারা সবাই জানেন ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণ এবার ভিন্নরূপে দেখা দিয়েছে। এ কারণে অনেক বেশি মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অতিদ্রুত ডেঙ্গু জ্বরের এই পরিস্থিতি অনুধাবন করতে পারেন।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, সাংবাদিকরা বিভিন্ন জায়গায় নিউজ কাভার করছেন। জনগণের কাছে আসল তথ্য উপস্থাপন করছেন। মিডিয়ার মাধ্যমে সব জনগণকে জানাতে চাই, আপনারা আতংকিত হবেন না। জ্বর এলেই ডেঙ্গু হয়েছে এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। বেশি ব্যথার ওষুধ খাবেন না।
অধ্যক্ষ বলেন, অনেকেই প্লাটিলেট কমে গেলেই চিন্তায় পড়ে যান। গতকাল ৯০ হাজার ছিল পরের দিন ৭৫ হাজারে নেমে এসেছে। এটা নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। প্লাটিলেট ৫০ হাজারে নামলেও সে নিরাপদ। প্লাটিলেট নিয়ে না দৌড়ালেই চলবে। আমাদের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। আইএমও, রেজিস্ট্রার, এইচএমওসহ সবাই প্রচণ্ড গতিতে দৌড়াচ্ছে। পঞ্চম বর্ষ ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ৭/৮টি স্কুলে পাঠানো হয়েছে। তাদের অতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। ডেঙ্গু এখন জাতীয় সমস্যা। সমন্বয় করেই চিকিৎসা দিচ্ছি।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে সবাই আতংকে আছেন। সবাই মিলে কাজ করতে হবে। এটা এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ। আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত উপকরণ আছে। আশা করি ডেঙ্গু মোকাবিলা করে জয়ী হবো। বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ৬৯৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৪ জন রোগী ভর্তি হলেও ১৩০ জন রোগী ছুটি নিয়েছেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক বিল্লাল আলম, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদারসহ অনেকে।