আমলাদের অহেতুক বিদেশ ভ্রমণ অযৈক্তিক, স্বীকার করলেন পরিকল্পনামন্ত্রী

0
427
সুনামগঞ্জে রেল চালু করা হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান

নিউজ ডেস্ক: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উন্নয়ন প্রকল্পের টাকায় সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর পরিণত হচ্ছে বিলাস ভ্রমণে। এমন মত দিয়ে সাবেক আমলা আর অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সুনির্দিষ্টকারণ আর উপযুক্ত কর্মকর্তা ছাড়া বিদেশ ভ্রমণে শুধু ভাবমূর্তি নষ্ট নয় বরং অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থেরও। কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কিছু অনিয়ম হচ্ছে স্বীকার করলেও পরিকল্পনামন্ত্রীর দাবি, সবই হচ্ছে আইন মোতাবেক।

সরকারের সবুজ সংকেত পাওয়া প্রায় সব প্রকল্পেই থাকে প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফর। এসব সফর বাবদ প্রতিবছর ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় কয়েক কোটি টাকায়। অন্তত গত ৫ অর্থবছরের হিসাব বলছে, চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া ১ হাজার ৪০৫টি প্রকল্পের মধ্যে ৯৯৩টিতেই অন্তর্ভুক্ত ছিল এমন সফর।

তবে উপকারের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই অযৌক্তিক প্রয়োজনে বিদেশ সফর নিয়ে গতবছর সমালোচনার মুখে পড়ে সরকারের বেশ কয়েকটি দপ্তর। নদী খালবিলের দেশ হওয়ার পরও পুকুর খননে প্রশিক্ষণ, আলু চাষ দেখতে, কিংবা লিফট ক্রয়ের মতো ঘটনায় বিদেশ ভ্রমণের সংবাদ প্রকাশের পর বিব্রত বোধ করে সরকারও। যদিও পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নানের দাবি, আইন মেনেই দেয়া হচ্ছে ভ্রমণ অনুমোদন।

তিনি বলেন, যেখানে একজন গেলে হয় সেখানে দু’জন যাওয়ার প্রবণতা থাকতে পারে। অথবা এমন হয় দুই দিনের জন্য গেলে হয় সেখানে ৫ দিন লাগাচ্ছেন। এগুলো মানার জন্য সতর্ক করা হয়। আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা আমার ইচ্ছায় হবে না। বিধানেই আছে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবেন।

জনগণের অর্থে প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফরের এমন রীতি প্রশাসনে আগে কখনোই ছিল না-এমন মত সাবেক আমলাদের। অন্যদিকে সরকারি অর্থে বিলাস ভ্রমণে আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে তা নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার আহ্বান অর্থনীতিবিদদের।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এ সফরগুলো হয় অধিকাংশ প্রকল্পের টাকায়। যারা একনেকের সদস্য অপ্রয়োজন প্রকল্প সফর বাদ দিতে পারেন।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, পুকুর কীভাবে কাটতে হয় সেটা দেখতে যদিও দেশের বাইরে যেতে হয় তাহলে আর কী? উন্নত প্রযুক্তি শিখতে দেশের বাইরে যেতে হবে কেন ট্রেইনার এনে দেশেই শেখা যায়। আমি মনে করি, আন্তর্জাতিকভাবে ও দেশের মধ্যেও এধরনের অহেতুক সফর নিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি খুন্ন হচ্ছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, দাপ্তরিক কাজে শর্তসাপেক্ষে বছরে ৪ বার, সর্বোচ্চ ১০ দিন করে বিদেশে অবস্থান করতে পারেন সরকারি কর্মকর্তারা। শর্ত ভঙ্গের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান থাকলেও এখন পর্যন্ত তা কার্যকরের নজির নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here