বাংলা খবর ডেস্ক: করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘরবন্দি মানুষকে গত চারদিন ধরে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি এই হাসপাতাল থেকে ২৪ ঘণ্টাই এই সেবা নিতে পারছেন যেকোনো মানুষ।
তিনটি হটলাইন নম্বরের মাধ্যমে এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালটির চিকিৎসকরা। নম্বরগুলো হলো: ০১৮৪৪৬৬৫৫৮৫, ০১৮৪৪৬৬৫৩৩৬, ০১৮৪৪৬৬৫৩৩৭।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক শহীদ মো. সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঢাকাসহ দেশের মানুষ এখন ঘরে অবস্থান করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ২৬ মার্চ থেকে আমাদের হাসপাতাল টেলিমেডিসিন ব্যবস্থার মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করেছে। আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। ২৪ ঘণ্টা যেকোনো মানুষ এই সেবা নিতে পারবেন।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪২৯ নম্বর কক্ষটি টেলিমেডিসিন কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের তিনটি স্মার্টফোন রয়েছে। এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
মুগদা টেলিমেডিসিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি কল পাচ্ছেন তারা। বিভিন্ন বয়সী মানুষ তাদের ফোন দিচ্ছেন। তবে সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি ফোন আসছে। যারা ফোন করছেন, তাদের ফোন নম্বর, ঠিকানা হাসপাতালের রেজিস্ট্রি খাতায় নিবন্ধিত করা হচ্ছে।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার রোকসানা আক্তার বলেন, ‘এখন লকডাউন, হোম কোয়ারেন্টাইন শুরু হয়েছে। যারা সর্দি, জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের আমরা টেলিমেডিসিন পদ্ধতিতে সেবা দিচ্ছি। জ্বর ছাড়া অন্য রোগীরাও আমাদের ফোন করছেন। প্রতিদিন অনেক ফোনকল পাচ্ছি। জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আমরা ওষুধের নাম বলে দিচ্ছি, টেক্সটও করছি। আর যারা ফোন করছেন, তারা যদি খিলগাঁও, মুগদা এলাকার বাসিন্দা হন, তাদের ওষুধেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে কীভাবে মানুষ সেবা পাচ্ছেন, সে ব্যাপারে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালের টেলিমেডিসিন বিভাগে সব ধরনের রোগীই সেবা পাচ্ছেন। এই বিভাগ ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। চিকিৎসক উপস্থিত থাকেন সব সময়। রোগীর কাছ থেকে ফোন পাওয়ার পর আমরা প্রথমে নম্বরটা খাতায় লিপিবদ্ধ করি। এরপর আমরাই আবার ওই রোগীর মোবাইল ফোন নম্বরে ফোন দিই। আমরা মনোযোগসহ রোগীর সব কথা শুনছি। তারপর ওই রোগীকে যে ওষুধ খেতে হবে, তা জানিয়ে দিচ্ছি। আর ওই রোগীর মোবাইল ফোনে টেক্সট করেও ওষুধের নাম লিখে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’
টেলিমেডিসিনের পাশাপাশি মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বহির্বিভাগেও চিকিৎসা পাচ্ছেন। হাসপাতালটির সামনে প্যান্ডেল বানানো হয়েছে। সেখানে রোগীরা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন।
হাসপাতালটির পরিচালক শহীদ মো. সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত যেকোনো ব্যক্তি আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের টেলিমেডিসিন বিভাগে ফোন দিন বা আমাদের হাসপাতালে আসুন। আমাদের হাসপাতাল থেকে কোনো রোগীকে ফিরে যেতে হয় না। সর্বোচ্চ সেবাটাই পাবেন। করেনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হোন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। নিয়মিত হাত পরিষ্কার করুন।’