বাংলাদেশে আড়াই কোটি মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে

0
372
দেশে খাদ্য উৎপাদনে যথেষ্ট অগ্রগতি হলেও দরিদ্র পরিবারগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা ঘাটতি, নারী ও কন্যাশিশুদের খাদ্য এবং পুষ্টি নিরাপত্তাহীনতা থেকেই যাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন প্রায় আড়াই কোটি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। গত দশবছরে অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৭ লাখ।

মঙ্গলবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে ক্রিশ্চিয়ান-এইডের সহায়তায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ আয়োজিত ‘নারী ও কন্যাশিশুদের খাদ্য পরিস্থিতি এবং খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম এমপি।

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের ভাইস-চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী রওশন আক্তার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব আব্দুল করীম এনডিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, একশন এইড বাংলাদেশের দেশীয় পরিচালক ফারাহ কবীর, ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশের দেশীয় পরিচালক সাকেব নবী। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ- সচিবালয়ের সমন্বয়কারী কানিজ ফাতেমা এবং সঞ্চালনা করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী।

বক্তারা বলেন, দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তাসহ সরকারের বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। কিন্তু সকল মানুষের জন্য দৈনিক ২ হাজার ১২২ কিলো ক্যালরি খাদ্য গ্রহণে দারিদ্র্য এখনও অন্যতম বাধা। অন্যান্য বিষয়ের মতো নারী ও কন্যাশিশুর খাদ্য পরিস্থিতি আরও নাজুক। নারীর স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজন অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

প্রধান অতিথি খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে নারী ও কন্যাশিশুরপ্রতি দৃষ্টিভঙ্গিগত দিক দিয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। খাদ্যাভ্যাসেও ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষণীয়। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষ নিরলসভাবে কাজ করছে। মানুষ যাতে নিশ্চিন্তে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে সে বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়, যার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন।

কাজী রওশন আক্তার বলেন, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচীর আওতায় ১২টি জেলার ২৩টি উপজেলায় ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে এবং ডব্লিউএফপির সহায়তায় এই কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে। আব্দুল করীম এনডিসি বলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র রেখে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন দুর্যোগকালীন নারী ও কন্যা শিশুদের খাদ্য পরিস্থিতি বিষয়ে আলোকপাত করে পুরুষের সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। ফারাহ কবীর বলেন, নারী ও কন্যাশিশুরপ্রতি বৈষম্য নিরসন এবং মানসিকতা পরিবর্তন করতে না পারলে সমাজে খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত থেকে যাবে। বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সরকারেরপ্রতি আহ্বান জানান তিনি। সাকেব নবী বলেন, একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য মা-কন্যাশিশুদের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

সভাপতির বক্তব্যে খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, সামাজিক প্রক্রিয়ার বিষয়গুলো শুধুমাত্র আইন দিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়, এর জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট সময় এবং সচেতনতা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here