বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন,‘মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী সরকারি যেকোনো একটি ভালো হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে নেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া হয়তো তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসককে কারাগারে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।’

মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে পয়লা বৈশাখের নিরাপত্তা বিষয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়াকে কিছু নতুন ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ নিতে চাইছেন না। তাই সরকারও মনে করছে, খালেদা জিয়াকে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনটি পেয়েছি। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে বোর্ড জানিয়েছে, খালেদা জিয়া অসুস্থ। তবে তা গুরুতর নয়।
কারাগার ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চার সদস্যের মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষার সুপারিশ করেছে। এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন গতকাল মঙ্গলবার কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছেছে। কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি হাসপাতাল থেকে প্রতিবেদনটি নিয়ে যান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া একা হাঁটতে পারছেন না। এ ছাড়া তাঁর আগের সমস্যাগুলো আরও বেড়েছে। এসব অসুস্থতার জন্য ওষুধ দেওয়া হলেও তিনি তা নিচ্ছেন না। ফলে অসুস্থতা বাড়ছে।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান মো. শামসুজ্জামান বলেন, তাঁরা খালেদা জিয়াকে দেখে যেসব পরীক্ষা প্রয়োজন তা করতে বলেছেন। এ বিষয়ে তাঁদের সুপারিশসহ প্রতিবেদনটি হাসপাতালের পরিচালকের কাছে দেওয়া হয়েছে। পরিচালক প্রতিবেদনটি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন।

রোববার খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরান কেন্দ্রীয় কারাগারে মেডিকেল বোর্ডের ৪ সদস্য দেখে আসেন। চিকিৎসক দলের প্রধান ও ঢামেকের অর্থোপেডিকস বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান জানিয়েছিলেন, তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। খালেদা জিয়া ঘাড়ে, বাঁ হাতে ও পায়ে ব্যথা বোধ করেন। হাত ঝিমঝিম করে। তিনি আগে যেসব ওষুধ সেবন করতেন, তার সঙ্গে আরও কিছু ওষুধ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রক্ত ও এক্স-রে পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সর্বোপরি তিনি অসুস্থ, তবে গুরুতর নয়।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয় খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামিকে। রায় ঘোষণার পরই নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে রাখা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here