দেশে প্রতিনিয়তই নারীদের ওপর যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কর্মক্ষেত্রসহ সব ক্ষেত্রেই নারীরা এখন যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নারীদের ওপর এসব নির্যাতন বন্ধে সর্বপ্রথমে একটি সমন্বিত আইন হওয়া দরকার বলে মনে করেন সুশাসনের জন্যে নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার।

আজ শনিবার সকালে ডেইলি স্টার ভবনের আজিমুর রহমান সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় বদিউল আলম একথা বলেন। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের গার্লস অ্যাডভোকেসি অ্যালায়েন্সের সহায়তায় বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এই সভার আয়োজন করে।

সভায় বদিউল আলম বলেন, ‘একটি সমাজ কতটা সভ্য, তা নির্ভর করে সে দেশের অপেক্ষাকৃত দুর্বল জনগোষ্ঠী কতটা ভালো আছে তার ওপর। আমরা দেখি, আমাদের সমাজে নারীরা এখনো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এবং তারা বিভিন্ন অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার। বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে ও যাত্রাপথে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’

সুজনের সম্পাদক বলেন, ‘২০০৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির দায়ের করা এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের লক্ষ্যে এক যুগান্তকারী রায় প্রদান করেন। এরপর প্রায় এক দশক অতিবাহিত হলেও বর্তমান সময়ে নারী ও শিশুর প্রতি সর্বক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ব্যাপকতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।’

সুজন সম্পাদক আরও বলেন, ‘এই অবস্থায় যৌন হয়রানি প্রতিরোধে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। আমরা মনে করি, নারীদের প্রতি এই সকল নির্যাতন রোধে প্রথমত একটি সমন্বিত আইন হওয়া দরকার।’

‘সকল ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষার জন্য খসড়া আইন, ২০১৮’ শীর্ষক এই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ছয়জন জেলা জজসহ একজন পাবলিক প্রসিকিউটর, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কয়েকজন আইনজীবী এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দরা।

এ সময় সভা থেকে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০১৮’ শীর্ষক একটা খসড়া আইন উত্থাপন করেন ‘বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পরিচালক তৌহিদা খন্দকার। সভা শেষে একটি সমন্বিত যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরির জন্য চার সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here