আনিসুল হক’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

0
741

রুমি আক্তার পলি, ঢাকা:
ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং টেলিভিশন উপস্থাপক আনিসুল হক’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। আনিসুল হক ১৯৫২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালি জেলার কোম্পানীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশবের বেশ কিছু সময় কাটে তার নানাবাড়ি ফেনী জেলার সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে।

তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক(সম্মান) ডিগ্রী অর্জন করেন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন।

আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক। তিনি মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। তাদের তিনজন সন্তান রয়েছে, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়ে তানিশা ফারিয়ামান এবং ওয়ামিক উমাইরা। ছেলে নাভিদুল হক বোস্টনের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে মোহাম্মদী গ্রুপের পরিচালক ও দেশ এনার্জি লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে কাজ করছেন। এছাড়া আনিসুল হকের ছোট ভাই আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক সাবেক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান।

১৯৮০ থেকে ১৯৯০-এর দশকে টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। তার উপস্থাপনায় ‘আনন্দমেলা’ ও ‘অন্তরালে’ অনুষ্ঠান দুটি জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পূর্বে বিটিভিতে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার মুখোমুখি একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনও করেছিলেন তিনি।

আনিসুল হক আশির দশকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

১৯৮৬ সালে তাঁর নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান “মোহাম্মদী গ্রুপ” প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রুপটির তৈরি পোশাক, বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, আবাসন, কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা রয়েছে। ২০০৭ সাল অনুসারে, বস্ত্র ও পোশাক খাতে গ্রুপটি প্রায় ৭০০০ জনের কর্মসংস্থান তৈরি করে।

আনিসুল হক ২০০৫ থেকে ২০০৬ সাল এই সময়ে বিজিএমই-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৮ সালে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতির দায়িত্ব করেন।

এছাড়া তিনি বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিআইপিপিএরও সভাপতি ছিলেন।

২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আনিসুল হক আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন লাভ করেন এবং বিজয়ী হন।

২০১৭ সালের ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান মেয়র আনিসুল হক। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৩ আগস্ট তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তাঁর মস্তিষ্কের রক্তনালীর প্রদাহ (সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিস) ধরা পড়ে। এরপর তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। তাঁর অবস্থার উন্নতি ঘটলে ৩১ অক্টোবর তাকে আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।

২৮ নভেম্বর অবস্থার অবনতি হলে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থেকে আবার তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় ও লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১০.২৩ মিনিটে লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজার পর তাকে বনানী কবরস্থানে ছোট ছেলে শারাফ ও মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here