জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল দায়ের করা হয়েছে। আপিল আবেদনে খালেদা জিয়ার জামিনও চাওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা প্রায় দুইশত পৃষ্টার এ আপিল দায়ের করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আপিল দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়  খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হয়েছিল। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিল খারিজ করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

গত বছরের ৩০ জুলাই আপিল নিষ্পত্তিতে মেয়াদ ৩১ জুলাই থেকে বর্ধিত করে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করেছিলেন আপিল বিভাগ। এই মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন আবেদনের পর খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর গত ১৬ মে তা বহাল রেখে ৩১জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। গত ১২ জুলাই এ আপিল শুনানি শুরু হয়।

এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দু’জন হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফেইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। পলাতক তিনজন হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন আদালত। এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। পরে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছিলেন আদালত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here